'ভুল করে ফেলেছি,' বলেছে ৭ মাসের শিশুর ধর্ষক, কী ঘটেছিল সেই রাতে?
আজ তক | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মাত্র ২৬ দিনের মাথায় চার্জশিট। ঘটনার ৮১ দিনের মধ্যে ফাঁসির সাজা। আদালত জানাল, বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা। রাজীব ঘোষ ওরফে গোবরাকে মৃত্যুদণ্ড দিল কলকাতার পকসো আদালত। কী করেছিল রাজীব? এক ৭ মাসের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেছিল সে। কলকাতায় বড়তলায় শিউরে ওঠার মতো নারকীয় ঘটনা।
কী ঘটেছিল সেই রাতে?
২০২৪ সালের ৩০ নভেম্বর রাতে ফুটপাথে মা-বাবার সঙ্গেই ঘুমোচ্ছিল ৭ মাসের শিশুকন্যা। মাঝরাতে ওই শিশুকন্যাকে কিডন্যাপ করা হয়। রাজীব ঘোষ ওরফে গোবরা তুলে নিয়ে যায় বাচ্চাটিকে। তারপর ওই শিশুকে ধর্ষণ করে। গোবরার বিকৃত লালসায় শিশুটি গুরুতর আহত। রক্তপাত হচ্ছিল যৌনাঙ্গে। পড়েছিল রাস্তায়। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। দুধের শিশুটি এখনও একটি সরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। নির্যাতনের জেরে তার যৌনাঙ্গ এবং বৃহদন্ত্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। ঘটনার পরেই বড়তলা থানার সাব-ইন্সপেক্টর মানসী মাইতির নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত। গ্রেফতার করা হয় রাজীবকে। ডিএনএ পরীক্ষায় যুবকের বীর্য ও রক্তের প্রমাণ মিলে যায়।
'ভুল করে ফেলেছি'
আদালতে শুনানির সময় রাজীব ঘোষ নামে ওই যুবক বলে, 'ভুল করে ফেলেছি। আমাকে যেন কম সাজা দেওয়া হয়।' সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এই অপরাধী যে কাজ করেছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। তাই কোনও অবস্থাতেই বিষয়টি লঘু করে দেখা উচিত নয়। সবদিক থেকেই সরকার পক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করেছে। তাই আমরা অপরাধী যুবকের সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানাচ্ছি।’ যাবতীয় দিক খতিয়ে দেখে অপরাধের গভীরতা বিচার করে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান বিচারকও। একটি ৭ মাসের শিশুকে ধর্ষণ করার মতো বিকৃত মানসিকতার এই অপরাধকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে জানান বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছিল
গত বছর ৪ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম থেকে অভিযুক্ত রাজীব ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৬ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে যুবককে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩৭(২), ৬৫(২) এবং শিশু সুরক্ষা আইনের (পকসো) ৬ নম্বর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় তাকে। বিচারক দোষী সাব্যস্ত ওই যুবককে বলেন, ‘ঘটনাটি বিরলের মধ্যে বিরলতম, যা ভাবলে আমাদের শিহরিত হতে হয়। ঘটনার নৃশংসতা ও ভয়াবহতার কথা মাথায় রেখেই আপনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। পাশাপাশি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার যে সমস্ত ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেই অভিযোগও সবদিক থেকে প্রমাণিত হয়েছে। তাই সেই অপরাধে আপনাকে সাজা দেওয়া হল।’