সাসপেন্ড হওয়ার পর উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রাখার অভিযোগে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিধানসভায় স্বাধীকার ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় সেই প্রস্তাব পাঠ করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে সমর্থন জানান ফিরহাদ হাকিম, অরুপ বিশ্বাস, দেবাশিস কুমার ও নির্মল ঘোষরা। পরের অধিবেশনে এর রিপোর্ট দেওয়া হবে।
রাজ্যে সরস্বতী পুজোয় বাধার অভিযোগ তুলে সোমবার বিধানসভায় আলোচনা চেয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এই প্রস্তাবে রাজি হননি অধ্যক্ষ। এরপরই অধিবেশন কক্ষে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে সরকারি নথি ছুঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। এরপরই শুভেন্দু–সহ বিজেপির ৪ বিধায়ককে বিধানসভা থেকে ৩০ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়।
সাসপেন্ড হওয়ার পরই শুভেন্দু উস্কানিমূলক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য রেখেছিলেন বলে অভিযোগ করেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। মন্ত্রীর অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে ‘মুসলিমদের সরকার’ বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। পাশাপাশি সাসপেনশনের কারণ হিসেবে শুভেন্দু সংবাদমাধ্যমে মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। এই দুটি কারণের প্রেক্ষিতেই বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘ডর আচ্ছা লগা’ অর্থাৎ শাসকদলের ভয় ভালো লাগছে।
শুভেন্দুর মন্তব্যকে ধিক্কার জানিয়েছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। এই মন্তব্যকে জাতি ও গণতন্ত্রের লজ্জা বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, বিরোধী দলনেতা সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়িয়ে যে ধরনের মন্তব্য করেছেন তা যথাযথ নয়। এই মন্তব্যে অপমানিত, অসম্মানিত হয়েছেন বিধায়ক–মন্ত্রীরা। সেই কারণেই স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশ আনা হয়েছে। তিনি আরও জানান, বিধানসভার ইতিহাসে এমন ঘটনা বা মন্তব্য এর আগে হয়নি। শুভেন্দু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন শোভনদেব। ভোটের জন্য এসব করা হচ্ছে বলে দাবি তাঁর।
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও শুভেন্দুর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান। তাঁর দাবি, শুভেন্দু অধিকারীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। এভাবে নয়, অধিবেশন কক্ষে এসে সমালোচনা করার জন্য বিরোধীদের আবেদন জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। তাঁর দাবি, ঘৃণার ভাষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ আছে। চাইলেই যে কেউ যেমন খুশি বলতে পারে না৷ এই বিষয়টি প্রিভিলেজ কমিটিতে গিয়েছে। বিরোধী দলের আচরণ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পাশাপাশি কোনও রকম প্ররোচনায় পা দিতে রাজ্যবাসীকে নিষেধ করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ আরও জানান, বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আনা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিশটি সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী অধিবেশনের আগেই সেই কমিটিকে এ বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।