প্রদ্যুত দাস: মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পাশাপাশি এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদেরও বনদপ্তরের তরফ থেকে গাড়ি সহ মোবাইল এসকর্ট করে বনদপ্তরের কর্মীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া এবং আসার ক্ষেত্রে সমস্ত রকমের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা ডিএফও -এর। মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও জঙ্গল এলাকার পরীক্ষার্থীদের এসকর্ট করে পৌঁছে দেবে বন দপ্তর।
গরুমারা জঙ্গল এলাকায় ২৩টি গাড়িতে ৩০০জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে বাড়ি থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন বন কর্মীরা। ১৭৮ কিমি এলাকায় এই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। এই কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে ৭৬ জন বন কর্মীকে জানিয়েছেন ডিএফও দ্বিজপ্রতীম সেন।
গরুমারার পাশাপাশি জলপাইগুড়ি ও বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনও একই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এবং পুলিস যৌথভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মোটের উপর শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হতে চলেছে।
মূলত, হাতির উৎপাত থেকে বাঁচতেই নেওয়া হয়েছে এই অভিনব পন্থা এবং এতে তাঁরা খুবই খুশি বলে জানাচ্ছে সেখানকারই এক বাসিন্দা। এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, তাঁরা খুবই চিন্তায় ছিলেন এইভেবে যে, কীভাবে তাঁদের বাড়ির ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে যাবেন।
ডিএফও দ্বিজপ্রতীম সেন বলেন, এই জায়গাটা অনেকটা বনের ভিতর অবস্থিত। জঙ্গল লাগোয়া যে সমস্ত গ্রাম আছে, সেখানকার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের নিরাপদে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকার অন্তর্গত বনদপ্তরের আধিকারিকরা। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সশস্ত্র বনকর্মীরা টহলদারী ভ্যান নিয়ে পরীক্ষার্থীদের যেমন পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন তেমনই পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে তাদের বাড়িতেও নিয়ে আসবেন তাঁরা। গরুমারার ১৭৮ কিলোমিটার অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গা, সেখানে ঘিরেফেলা হয়েছে এবং ৩০০ জন পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে সাহায্য করা হয়েছে। ৭৬ জন সশস্ত্র বনকর্মীকে রাখা হয়েছে শুধুমাত্রই মাধ্যমিক পরীক্ষাদের জন্য। জলপাইগুড়িতে গরুমারা ডিভিশন মিলিয়ে ৫০টি গাড়ি রাখা হয়েছে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য। পরীক্ষার্থীরা যাতে নিরাপদে পরীক্ষা দিতে যেতে পারেন তারই ব্যবস্থা করেছেন তাঁরা। এখানে বন্যপ্রাণীদের অবাধে যাতায়াত হওয়ার কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছেন। এই ব্যবস্থা যেমন মাধ্যমিকের সময়ও থাকবে তেমনই উচ্চমাধ্যমিকের সময়ও থাকবে জানাচ্ছেন ডিএফও। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, তাঁরা সব সময়ই পরীক্ষার্থীদের পাশে আছেন। তাঁরা বলেছেন, মোট ২০০জন আধিকারিককে রাখা হয়েছে শুধুমাত্র পরীক্ষার্থীদেরকে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
ছাত্রছাত্রীরাও বলেছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তারা খুবই খুশি। তারা হাতির ভয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছিল তার ব্যবস্থা করেছেন বনদপ্তরের আধীকারিকরা, এতে নিরাপদে তারা পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে পারছে।