পাওনা ছিল ৭০০ টাকা। তা নিয়ে তুমুল অশান্তি। মদের নেশার ঘোরে সেই অশান্তিই কেড়ে নিল এক তরতাজা প্রাণ। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় থানার পলুসিটা এলাকায়। নিহতের নাম নেপাল পণ্ডিত, তিনি নারায়ণগড় থানার বড়মারা এলাকার বাসিন্দা। বছর ৩৮-এর নেপাল বুধবার ভোরে মারা গিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতে বাড়ির কাছেই পলুসিটা গ্রামে শ্মশানকালীর পুজোয় গিয়েছিলেন নেপাল। সেখানে একটি মেলাও হয়েছিল। সেখানে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে মদ খাচ্ছিলেন নেপাল। সেখানেই পাওনা নিয়ে বচসা শুরু হয়, তার পরেই মঙ্গলবার রাত ১টা নাগাদ মারামারি হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, নেপালের থেকে দীপঙ্কর ৭০০ টাকা পেত। ওই পাওনা নিয়ে আগেও একবার অশান্তি হয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও ওই টাকা নিয়েই অশান্তি শুরু হয়। সঙ্গে থাকা তিন বন্ধু নেপালকে তুমুল মারধর করে বলে অভিযোগ। বন্ধুদের মারে নেপালের মাথায় বা বুকে গুরুতর আঘাত লাগে বলে প্রাথমিক অনুমান। জখম অবস্থায় বাড়ি ফিরে আসেন নেপাল। পরিবারের দাবি, রাতেই নেপাল বারবার বলছিলেন তাঁর বমি পাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেই তাঁকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার ভোরে ওই নার্সিংহোম থেকে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় নেপালের। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালেই বৃহস্পতিবার দেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
নেপালের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, বছর দশেকের মেয়ে, বাবা-মা এবং ভাই। বুধবার বিকেলে মৃতের ভাই গয়াপ্রসাদ পণ্ডিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নারায়ণগড় থানায় FIR দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যেই নারায়ণগড়ের একটি এলাকা থেকে মূল অভিযুক্ত দীপঙ্কর বেরাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত সুরজিৎ দোলুই ও শত্রুঘ্ন বেরা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। ধৃতকে বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশের এক আধিকারিক। জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেছেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’