জমি বিবাদের শালিশি সভায় গরহাজির, নদিয়ায় একঘরে গোটা পরিবার
প্রতিদিন | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে গ্রামের এক পরিবারকে একঘরে করার নির্দেশ ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’র। মাইকিং করে একঘরে করার নিদান গ্রামের মাতব্বরদের। সেখানে যুক্ত থাকায় বিতর্ক জড়িয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী মোশারফ মণ্ডল ও স্থানীয় মাতব্বর মমিন মোল্লা। ঘটনাটি ঘটেছে চাপড়া থানার পদ্মমালা গ্রামে। পুলিশ কিছু জানে না বলে জানিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।
জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মতিন মোল্লার জমিতে জবরদখল করে দীর্ঘদিন ধরেই বসবাস করছিলেন মুজিবর মোল্লা, নজরুল মোল্লা ও মমীন মোল্লা। জমির দখল ফেরত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। সম্প্রতি আদালত জবরদখল উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন। অভিযোগ এরপর গত শনিবার সন্ধ্যায় মমীন মোল্লা স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী মোশারফ মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে সালিশি সভা ডাকেন। সেই সভায় ডাকা হয় মতিন মোল্লার পরিবারকেও। কিন্তু তাঁরা না যাওয়ায় মতিন মোল্লা-সহ তাঁর আরও দুই ভাই আবদুল আলিম মোল্লা, জামশেদ মোল্লার পরিবারকে এক ঘরে করার নিদান দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিপাকে পড়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা। এমনকী এ বিষয়ে পুলিশকেও অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা।
একঘরে করে রাখার নিদানের পর পরিবারের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ রাখছেন না। বন্ধ জল সরবরাহ। গৃহশিক্ষক পড়াচ্ছেন না বাড়ির পড়ুয়াদের, স্কুল ভ্যানও তাঁদের স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছে না। এমনকী তাঁদের দোকানেও কোনও খরিদ্দার যাচ্ছেন না। এরফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ওই পরিবারের সদস্যরা।
যদিও অভিযুক্তদের দাবি, সালিশি সভায় ওই পরিবারের লোকজন উপস্থিত না হয়ে সভায় উপস্থিত প্রত্যেককে অপমান করেছেন। সেই কারণেই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই পরিবারের সঙ্গে চলবেন না। এক ঘরে করার পাশাপাশি মাইকিং করে প্রচার করা হলেও পুলিশের কাছে কোনও খবর ছিল না। যদিও এই বিষয়ে ডিএসপি হেডকোয়ার্টার রজতকান্তি পাল জানান, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে সংবাদটি পাওয়ার পর বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।