ভাত খেতেও হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের! নতুন চালের জোগানে মিলবে স্বস্তি?
প্রতিদিন | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: ভালো মিনিকেট ৬২, বাসমতি ৮৫, ভালো বাসমতি ১০০, জিরাকাটি ৫৮, বাঁশকাটি ৬৫, গোবিন্দভোগ ১০০। গত ২ মাসে প্রতি কেজিতে অধিকাংশ চালের দাম বেড়েছে ৬ থেকে ১০ টাকা! প্রতি বছরই এই সময়ে নির্দিষ্ট চালের জোগান কম থাকে। তবে এবার দামবৃদ্ধি অন্য বছরগুলির তুলনায় একটু বেশিই। ফলে মাথায় হাত পড়েছে আমজনতার। ব্যবসায়ীদের আশা, এপ্রিলে নতুন চাল বাজারে এলেই স্বস্তি মিলবে। যদিও তার আগে কীভাবে মানুষকে সুরাহা দেওয়া যেতে পারে, উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। আরও বেশি সক্রিয় করা হয়েছে টাস্ক ফোর্সকে।
যে মিনিকেট চাল খুচরো বাজারে ৫২ টাকায় মিলত তার দাম এখন ৬২ টাকা। বাসমতি ছুঁয়েছে ১১০ টাকা প্রতি কেজি। এমনকী আতপ চালের দামও ৪০ টাকা ছুঁয়েছে। রেশনে নিখরচায় বা দু’টাকা দরে বা কম দামে চাল মিললেও মধ্যবিত্তর বড় অংশ বা উচ্চবিত্তরা বাজার থেকেই কিনে নেন। ফলে তাঁদের পকেটে টান পড়ছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কয়েক ধরনের চালের জোগান কমে গিয়েছে। ফলে দাম তো বাড়বেই। এপ্রিল মাসের পর নতুন চাল বাজারে এলে দাম কিছুটা কমতে পারে। গত অক্টোবরের পর এরাজ্যের চাল বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশে রপ্তানি হয়েছে। যার জেরেই কমেছে জোগান। রাইস মিল মালিকরা জানাচ্ছেন, দু’বছর অন্য দেশে চাল রপ্তানি বন্ধ ছিল। তবে ২০২৪ সালের শেষের দিক থেকে ফের তা চালু হয়েছে। চাষিরা একটু দাম পাচ্ছেন বাইরে চাল পাঠিয়ে। তার জেরেই বঙ্গে কিছুটা চালে ঘাটতি।
গতবছর যে চাল উঠেছে, তা এখন শেষের দিকে। যে কারণে জোগান কম। নতুন চাল ওঠার আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। রাজ্যের রাইস মিল মালিক সংগঠনের সভাপতি আবদুল মালেক জানান, বাঁশকাটি, মিনিকেট প্রভৃতি চাল তৈরি হয় বোরো মরশুমের ধান থেকে। ওই ধান ওঠে এপ্রিল-মে নাগাদ। গত বোরো মরশুমে যে ধান উঠেছিল তার মজুত শেষের মুখে। নতুন বোরো ধান ওঠার পরই সরু চালের দাম কিছুটা কমবে বলে আশা করা যায়। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানায়, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফড়েদের উপদ্রবও বেড়েছে। আগে মজুত করা ধান ও চাল বেচে কিছু রাইস মিল মালিক ও ফড়েরা এখন লাভ করছেন।
তবে ব্যবসায়ী এবং মিল মালিকদের দাবি, চাষিরা তাঁদের কাছে মজুত ধান বেচে এখন বাড়তি দাম পাচ্ছেন। বেশি দামে ধান কেনার ফলেই বাড়ছে চালের দাম। খাদ্য আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যের ৮ কোটি ৭৮ লক্ষ রেশন গ্রাহককে বিনামূল্যে চাল দেওয়া হয়। ফলে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির বিশেষ সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু, অনেক গ্রাহক রেশনের চাল বেচে দিয়ে সেই টাকায় খোলাবাজার থেকে সরু চাল কিনে খাচ্ছেন। ফলে সরু চালের চাহিদা বেড়েছে। উলটোদিকে জোগান কমেছে। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্স নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার। যদিও সম্প্রতি বর্ধমানে বিভিন্ন বাজার এবং রাইস মিলে হানা দিয়েছে টাস্ক ফোর্স।