• প্রথমবার তমলুকে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর পাদুকা সকলে দর্শন করতে পারবেন  
    বর্তমান | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: এই প্রথম তমলুকে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু জিউ মন্দিরে মহাপ্রভুর পবিত্র পাদুকা সকল দর্শন করতে পারবেন। প্রাচীন তমলুক শহরে মহাপ্রভুর প্রথম আগমন উপলক্ষ্যে আগামী ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ২৩ তারিখ পাদুকা নিয়ে শহর পরিক্রমা হবে। এরাজ্যের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকেও প্রচুর সংখ্যক গৌরাঙ্গভক্ত অনুষ্ঠানে শামিল হবেন। সাড়ম্বরে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে গর্ভগৃহ থেকে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পাদুকা প্রকাশ্যে আনা হবে। প্রথমবার সামনে থেকে দেখা ও ছোঁয়ার সুযোগ মিলবে। মহাপ্রভু আগমনের ৫১৬তম বর্ষ উপলক্ষ্যে ৫১৬জন খোলবাদক এবং ৫০টির বেশি লোকসংগীতের দল পরিক্রমায় অংশ নেবে। এছাড়াও মহাকুম্ভ থেকে জল আনা হবে। যাঁরা মহাকুম্ভে যেতে পারেননি তাঁদের জন্য এই সুযোগ করে দিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ।


    ১৫১০ সালে ২০ ফাল্গুন শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে প্রাচীন তমলুক শহরে নরপোতায়(বর্তমানে মহাপ্রভু মন্দির) পা রেখেছিলেন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু। এখানে রাত্রিবাস করে ওড়িশার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। তারপর ১৫১৫ সালে পুরী যাওয়ার সময় এখানে ১৫ দিন কাটিয়েছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ পার্ষদ মেদিনীপুরের আদিকবি শ্রীল বাসুদেব ঘোষ ১৫৩৪ সালে মহাপ্রভুর বিগ্রহ স্থাপন করেন। মহাপ্রভুর প্রথম আগমন উপলক্ষ্যে প্রতিবছর এই সময় মহোৎসব উদযাপন করা হয়। এবার ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি এই উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচি রাখা হয়েছে।


    ২২ তারিখ দুপুর ১২টায় মন্দিরে ছাপান্নভোগ সহযোগে আরাধনা হবে। বিকালে মহাপ্রভুর পাদুকা সবার জন্য প্রকাশ্যে আনা হবে। সন্ধ্যায় ভজন হবে। ২৩ তারিখ শহর পরিক্রমা হবে। অন্তত ছ’থেকে সাত হাজার মানুষ তাতে অংশ নেবেন বলে উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌরকিশোরনন্দ দেবগোস্বামীর দাবি। মহাপ্রভুর বিগ্রহ, পাদুকা নিয়ে নগর পরিক্রমায় ৫১৬ জন খোলবাদক, ৫০টির বেশি লোকশিল্পের টিম শামিল হবে। দুপুর ১২টা থেকে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। বি঩কেল ৩টা থেকে ধর্মসভা ও বৈষ্ণব সম্মেলন হবে। সন্ধ্যা ৬টায় চৈতন্যচরিতামৃত দান, গীতা দান, গ্রন্থদান ও বস্ত্রদান করা হবে। সন্ধ্যা ৭টায় লীলা কীর্তন পরিবেশিত হবে।


    জানা গিয়েছে, নবদ্বীপে মহাপ্রভুর কৈশোরের পাদুকা, তমলুকের মন্দিরে সন্ন্যাস সময়কালীন পাদুকা এবং পুরীতে অন্তর্ধান সময়কালীন পাদুকা আছে। তমলুক শহরে মহাপ্রভুর মন্দিরে গর্ভগৃহে এই পাদুকা পুজো করা হয়। সকলের পক্ষে এই পাদুকা দর্শন সম্ভব হয় না। কিন্তু, এবার প্রথম পাদুকা সকলের সামনে আনা হবে। ছুঁয়ে দেখার সুযোগও মিলবে। অষ্টধাতুর সিংহাসনে সেই পাদুকা প্রকাশ্যে এনে সকলের দেখার সুযোগ থাকবে।নানা রাজ্য থেকে আসা ভক্তদের জন্য ইতিমধ্যে শহরের বিভিন্ন গেস্ট হাউস, ক্লাব এবং অতিথি নিবাস বুক করা হয়েছে। প্রথম আগমন মহামহোৎসব উপলক্ষ্যে তমলুক শহরে এরাজ্যের পাশাপাশি ভিনরাজ্যের ভক্তদের সমাগম হবে। এখন মন্দিরে চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রস্তুতি চলছে। গৌরকিশোরানন্দ দেবগোস্বামী বলেন, এই মহামহোৎসবে গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রধান আচার্য কৃষ্ণকেশবানন্দ দেবগোস্বামী উপস্থিত থাকবেন। বিভিন্ন রাজ্যের আশ্রম থেকে পদাধিকারী, মহন্ত, দ্বারাচার্য, জগৎগুরু উপস্থিত হবেন।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)