নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান ও সংবাদদাতা, কালনা: তার জেরেই কালনা থানার রানিবন্ধ এলাকায় প্রেমিককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল প্রেমিকার বিরুদ্ধে। মৃতের নাম শামিম মণ্ডল(৩২)। খুনের পর প্রেমিকা নয়ন ক্ষেত্রপাল পুলিসের কাছে আত্মসমর্পণ করে। ধারালো অস্ত্রটিও সে জমা করে। পুলিস তার বাবা ভজন ক্ষেত্রপাল ও মা চন্দনা ক্ষেত্রপালকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই যুবকের মাথা, কপাল ও গলায় কোপ মারা হয়। প্রকাশ্যে এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। এমনকী, আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। এলাকায় থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রেমিকার কাছে ওই যুবক টাকা ধার নিয়েছিলেন। তারপর তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। কিছুদিন আগেও তাঁদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা থানার কর্পুরডাঙার বাসিন্দা শামিমের সঙ্গে পাশ্ববর্তী রানিবন্ধ বাউড়িপাড়ার নয়নের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। দু’জনই বিবাহিত। একে অপরের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। শামিমের আর্থিক সমস্যা হওয়ায় অন্য জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে সাহায্য করত নয়ন। আর্থিক লেনদেনের কথা উভয় পরিবারের লোকজনও জানতেন। কিন্তু সম্প্রতি দু’জনের সম্পর্কের অবনতি হয়। আর্থিক লেনদেন নিয়ে তিক্ততাও তৈরি হয়। মৃতের দিদির অভিযোগ, মঙ্গলবার নয়ন শামিমের বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যায়। বুধবার সকাল ৯টা নাগাদ নয়ন বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। বেলা ১১টা নাগাদ পরিবারের লোকজন জানতে পারেন, নয়নের বাড়ির কাছাকাছি রাস্তার ধারে শামিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। পুলিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে দেহ উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শামিম বাইক নিয়ে হাটপুকুর পাড় এলাকায় আসতেই নয়নের বাবা ও মা তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নয়ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে শামিমের মাথা, গলা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। শামিম রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে বুলবুলিতলা ফাঁড়ির পুলিস ঘটনাস্থল ও নয়নের বাড়ি পৌঁছয়। গায়ে রক্তমাখা অবস্থায় নয়ন ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিসের সামনে হাজির হয়ে সে খুন করেছে বলে আত্মসমর্পণ করে।
মৃতের মা সরিফা বিবি বলেন, ওদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। সকালে ছেলেকে ফোনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কী কারণে ওরা এমন করল আমরা কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। আমরা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। কালনার এসডিপিও রাকেশকুমার চৌধুরী বলেন, এক যুবককে খুনের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনের পিছনে সম্পর্কের অবনতি ও আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।