• গলসির ভুঁড়ি গ্রামে ফুটবলার আবদুস সামাদের জীর্ণ জন্মভিটা সংস্কারের দাবি
    বর্তমান | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানকর: গলসির ভুঁড়ি গ্রামে অবিভক্ত ভারতীয় ফুটবলের জাদুকর সৈয়দ আবদুস সামাদের জন্মভিটে ও ভিটে সংলগ্ন মসজিদ সংস্কারের অভাবে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হতে বসেছে। স্থানীয়দের বক্তব্য, বিখ্যাত এই ফুটবলারের জন্মভিটা জীর্ণ হতে শুরু করেছে। আর কয়েক বছরের মধ্যেই তা ধ্বংস হয়ে যাবে। অবিলম্বে প্রশাসনের এদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন। তাঁর জন্মভিটায় গড়ে তোলা হোক সংগ্রহশালা। আন্তর্জাতিক খ্যাত এই ফুটবলারের জন্ম গলসির ভুঁড়িতে। অবিভক্ত ভারতীয় দলে শুধু প্রতিনিধিত্বই করেননি। জাতীয় দলের অধিনায়কও ছিলেন তিনি। জানা যায়, মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯১২ সালে কলিকাতা মেইন টাউন ক্লাবে যোগদান করেন তিনি। তাঁর খেলা দেখে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ দেন নির্বাচকরা। ১৯২৪ সালে সামাদ অবিভক্ত ভারতের জাতীয় ফুটবল দলে নির্বাচিত হন। দক্ষতার সঙ্গে খেলে ১৯২৬ সালে দলের অধিনায়কও হন তিনি। সে সময় ভারতের হয়ে বার্মা বা মিয়ানমার, সিলোন অর্থাৎ শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, হংকং, চীন, ইংল্যান্ড সহ নানা দেশে সফর করেন। চীনের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ভারত ৩-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পরও তিনি একাই চারটি গোল দিয়ে দলকে জয় এনে দেন। তবে দেশভাগের সময় সামাদ চলে যান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের পার্বতীপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফুটবলারের বাড়ি লাগোয়া মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন তিনি। সেটিও ধ্বংসের পথে। মসজিদটি এখন ভাঙা মসজিদ নামে পরিচিত। একসময় এখানে ছিল ঘোড়াশাল। আজ আর নেই। ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে খেলার সময় সামাদের শট গোলপোস্টের ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। পরপর দুইবার এই ঘটনা ঘটলে তিনি রেফারিকে চ্যালেঞ্জ করে জানিয়েছিলেন, গোলপোস্টের উচ্চতা কম আছে। পরে নাকি মেপে দেখা যায় গোলপোস্টের উচ্চতা নির্ধারিত মাপের থেকে চার ইঞ্চি কম রয়েছে। প্রায় একার কৃতিত্বে গ্রেট ব্রিটেনকে ৪-১ গোলে হারিয়ে ছিলেন সামাদ। পায়ের জাদুতে মুগ্ধ হয়ে ভারতীয় ফুটবলের জাদুকর নামেও ডাকা শুরু হয় তাঁকে। বলা হয়, ভুঁড়ি গ্রামে শুধু তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে তাই নয়। বিশ্ববিখ্যাত খেলোয়াড় হওয়ার পরও তিনি গ্রামে এসেছেন। এক সময় পা ভেঙে এখানে অনেকদিন ছিলেন বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের। স্থানীয় ক্রীড়াপ্রশিক্ষক শ্যামল গোস্বামী বলেন, এত বড় মাপের একজন ফুটবলার ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অন্তরালে চলে যাচ্ছেন। ওঁর আবক্ষ মূর্তি এবং জন্মভিটাতে সংগ্রহশালা তৈরি হলে তাঁকে উপযুক্ত সম্মান জানানো হবে। গলসি-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হেমন্ত পাল বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আবক্ষ মূর্তি বসানোর কথা ভাবছি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)