• বাংলা ও ইংরেজিতে জায়গার নাম দু’রকম, এল সংশোধনের প্রস্তাব
    বর্তমান | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর অধুনা মুর্শিদাবাদের বহরমপুরকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাহেবরা  ‘বেহরামপুর’ নামে ডাকতে শুরু করেন। দিনে দিনে সেই ‘বেহরামপুর’ হয়ে ওঠে ‘বহরমপুর’। কিন্তু ইংরেজিতে এখনও মুর্শিদাবাদ জেলার সদর শহরের নামের যে বানান লেখা হয়, সেই অনুযায়ী উচ্চারণ ‘বেহরামপুর’ই হয়। ফলে একই শহরের নাম দু’টি ভাষায় দু’রকমভাবে উচ্চারিত হয়। সরকারি নথিতেও এর প্রভাব পড়ে। তবে শুধু বহরমপুরই নয়, রাজ্যের এমন মোট পাঁচটি জায়গা রয়েছে, যার নামের উচ্চারণ বাংলা ও ইংরেজিতে দু’রকম। বুধবার বিধানসভায় এই পাঁচটি জায়গার নামের ইংরেজি বানানে বদল এনে উচ্চারণে সামঞ্জস্য নিয়ে আসার প্রস্তাব উত্থাপিত হল। বুধবার সকালে অধিবেশনে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন লালগোলার বিধায়ক মহম্মদ আলি। 


    বাকি চারটি কোন শহর? লালগোলার বিধায়ক জানান, বহরমপুর ছাড়াও তালিকায় রয়েছে হুগলির চন্দননগর এবং চুঁচুড়া, নদীয়ার পলাশী এবং বীরভূমের সিউড়ি। ইংরেজি বানান অনুযায়ী গঙ্গাপাড়ের সাবেক ফরাসি কলোনি চন্দননগরের উচ্চারণ ‘চান্দের নগর’। ইংরেজি বানান অনুযায়ী সিউড়ির উচ্চারণ হয় ‘সুরি’। একইভাবে ভাগীরথীর পূর্বপাড়ে অবস্থিত পলাশীর উচ্চারণ হয় ‘প্লাসে’। এর আগে বর্ধমান এবং মেদিনীপুর নিয়েও একই ধরনের সমস্যা ছিল। তবে জেলা ভাগের সময় উচ্চারণে সামঞ্জস্য আনতে সরকারিভাবে ইংরেজি বানানে বদল আনা হয়। সেই সংশোধিত ইংরেজি বানানই বর্তমানে সরকারি সমস্ত নথি এবং কাজকর্মে ব্যবহৃত হয়। সেইমতো এই পাঁচটি জায়গার ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ চেয়ে এদিন বিধানসভায় বক্তব্য রাখেন মহম্মদ আলি। 


    দুই ভাষায় দু’রকম উচ্চারণ হলে কীরকম সমস্যা হয়? প্রশাসনিক কর্তাদের মতে, এক-এক জায়গায় এক-একরকম বানান চোখে পড়ে। বিভ্রান্ত হতে হয় সাধারণ মানুষকে। সরকারি নথিতেও দু’রকম বানান থেকে যায়। ফলে ভুল বোঝাবুঝি বা বিভ্রান্তির আশঙ্কা থাকে। অধিবেশন কক্ষের বাইরে এ বিষয়ে আলোচনায় লালগোলার বিধায়কের যুক্তি ও প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, ‘এই সমস্ত নামের ইংরেজি বানানের সঙ্গে ঐতিহাসিক কোনও বিষয় জড়িত আছে কি না, তা দেখে নিয়ে সংশোধনের পথে হাঁটলে ভালো হবে বলেই আমার মনে হয়।’
  • Link to this news (বর্তমান)