• ‘বাড়িতে যান, বডি পাবেন’, জখম প্রণয় মুখ খুলতেই তোলপাড় পুলিসে  
    বর্তমান | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘বাড়িতে যান, বডি পাবেন’। ট্যাংরার  বাসিন্দা প্রণয় দে’র হাসপাতালে দেওয়া এই বয়ানই মোড় ঘুরিয়ে দেয়। শীল লেনের বাড়িতে এসে দরজা ভেঙে দোতলায় যেতেই তদন্তকারীরা দেখেন, দু’টি নয়, তিনটি দেহ পড়ে রয়েছে! তদন্তকারীরা ভাবছেন, বাড়ির দুই মহিলার যে মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে প্রণয় এতটা নিশ্চিত হলেন কী করে! কেবলমাত্র খুন করে থাকলে, তবেই স্পষ্ট করে বিষয়টি বলা সম্ভব। দুই গৃহবধূর আঘাতের ধরনও খুনের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তদন্তকারীরা অবশ্য সমস্ত দিক খোলা রেখেই এগচ্ছেন। আজ ময়নাতদন্তের পর সমস্ত রহস্য কেটে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা।


    ট্যাংরাকাণ্ডের তদন্তে একাধিক প্রশ্ন ভাবাচ্ছে অফিসারদের। তিনটি ঘরে পড়ে ছিল মৃতদেহগুলি। সুদেষ্ণা, রোমি ও প্রিয়ংবদা তিনজনেই বিছানায় ছিলেন। তদন্তে উঠে এসেছে, দুই গৃহবধূ সুদেষ্ণা ও রোমির দু’হাতে  আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুই হাতের শিরাও কাটা ছিল। একইসঙ্গে রোমির গলার বাঁদিক থেকে ডানদিক পর্যন্ত গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। রোমির মেয়ে প্রিয়ংবদার নাকে ও মুখে আঘাত আছে। যা ছুরি দিয়ে মারার ফলেই হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, এক হাতের শিরা কাটার পর যে যন্ত্রণা আর রক্ত বেরোবে, তা নিয়ে অন্য হাতের শিরা কাটা কি সম্ভব? আর যদি কেউ নিজের শিরা কাটেন, তাহলে আর গলায় আঘাত করতে যাবেন কেন? কারণ শিরা কাটার পর যেভাবে রক্তক্ষরণ হবে, তাতে ফের ছুরি ধরে গলায় চালানো কার্যত অসম্ভব। যে ধরনের ক্ষত রয়েছে তা করতে গেলে হাতের জোর লাগবে। ওই অবস্থায় দুই গৃহবধূর থাকার কথা নয়। তদন্তকারীদের ভাবচ্ছে যদি আত্মহত্যাই করবেন তাহলে বিছানায় শুয়ে শিরা কাটবেন কেন? শুয়ে থাকা অবস্থায় কী শিরা কাটা সম্ভব? তদন্তকারীদের ধারণা, দুই গৃহবধূ ও  কিশোরীকে কিছু খাইয়ে আচ্ছন্ন করে দেওয়া হয়। তাঁরা প্রতিরোধের রাস্তায় যেতে পারেননি। খুনের তত্ত্বই জোরালো হচ্ছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, আচ্ছন্ন অবস্থায় দুই গৃহবধুর শিরা কাটা হয়েছে। আর একটি ছুরি দিয়ে কীভাবে দুই গৃহবধূ শিরা কাটবেন? বাড়ির তিনতলার ঘর থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার হয়েছে। শিরা কাটার পর রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানে পৌঁছে ছুরি রেখে আসাটাও কি সম্ভব! ছুরি তিনতলার ঘরে মেলায় তদন্তকারীদের অনুমান, সেটি লুকোনোর চেষ্টা মাত্র। তথ্যপ্রমাণ লোপাট করাই উদ্দেশ্য।  কিন্তু প্রণয়ের ১৪ বছরের ছেলেকে কেন আঘাত করা হল না এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা? তাহলে কি তাঁকে উপরের ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল? উত্তর খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)