• শুভেন্দুর সাসপেনশন প্রত্যাহার চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি সুকান্তর, বদল রাজনৈতিক সমীকরণে!
    এই সময় | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশে দাঁড়ালেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিধানসভা থেকে একমাসের জন্য শুভেন্দুকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বুধবার তিনি চিঠি পাঠিয়েছে‍ন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে।

    রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের কাছে সুকান্তর আর্জি, ‘আপনাকে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে অনুরোধ করছি। বিরোধী দলনেতা–সহ যে চার বিধায়কের উপর থেকে সাসপেনশন তুলে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে আপনাকে অনুরোধ করছি।’

    গত সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনা ছিল। সেখা‍নে রাজ্যের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরস্বতী পুজো বন্ধের অভিযোগ তুলে মুলতুবি প্রস্তাব আনতে চান বিজেপি বিধায়করা। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি না–মেলায় কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।

    এরপরই স্পিকারের দিকে কাগজ ছুড়ে মারার অভিযোগে পদ্মের চার বিধায়ক— শুভে‍ন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পল, বঙ্কিম ঘোষ এবং বিশ্বনাথ কারককে তিরিশ দিনের জন্য বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করা হয়। বিরোধী দলনেতার চেয়ারে বসার পর এ নিয়ে চারবার বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড হলেন শুভেন্দু।

    তবে অতীতে কখনও বিরোধী দলনেতার সাসপেনশনের বিরোধিতা করে রাজ্যপালকে চিঠি লেখেননি বিজেপি রাজ্য সভাপতি। ফলে সুকান্তর এই তৎপরতা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজ্যপালের কাছে পাঠানো চিঠিতে সুকান্ত লিখেছেন, ‘বিধানসভা অধিবেশনে শালীনতা বজায় রাখা দরকার বলে আমি মনে করি। কিন্তু এটা উদ্বেগের, যে বিধায়করা বাংলার মানুষের কথা তুলে ধরেন, বারবার তাঁদেরই বিধানসভা থেকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার।’

    সম্প্রতি বিজেপির একটি সাংগঠনিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারীর হাজির না–থাকাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা সুকান্তর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, শুভেন্দু বৈঠকে ছিলেন না কেন? জবাবে বিজেপি রাজ্য রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন, ‘আমাদের সাংগঠনিক বৈঠকগুলিতে উনি কমফর্ট ফিল করেন না।’ তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বঙ্গ–বিজেপির অন্দরে জল্পনা ছড়ায়।

    শুভেন্দু সাধারণত নিজের দলের কোনও নেতার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেন না। এক্ষেত্রে তিনি অবশ্য মুখে কুলুপ এঁটে থাকেননি। শুভেন্দুও পাল্টা বলেন, ‘আমি বিজেপির কোনও সাংগঠনিক পদে নেই। তাই দলের সাংগঠনিক বৈঠকে আমার থাকার কথা নয়।’ ওইদিন তাঁর কী কী রাজনৈতিক কর্মসূচি ছি‍ল, সেই ফিরিস্তিও সাংবাদিকদের জানান শুভেন্দু।

    এরপর থেকেই বঙ্গ–বিজেপির এই দুই শীর্ষ নেতার রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে নানা জল্পনা ছড়াতে শুরু করে গেরুয়া শিবিরে। বিজেপির একাংশ প্রশ্ন তোলে, তৃণমূলকে নিশানা করার বদলে পদ্ম নেতারা কি একে অন্যকে আক্রমণ করতে থাকবেন?

    সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও বঙ্গ–বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে ক্ষুব্ধ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এ দিন রাজ্যপালকে চিঠি দিলেও সুকান্ত আদপে শুভেন্দুকেই বার্তা পাঠাতে চেয়েছেন। কারণ, তিনি বিলক্ষণ জানেন, বিজেপি নেতাদের মধ্যে দড়ি টানাটানিতে সব থেকে বেশি লাভ তৃণমূলেরই।

  • Link to this news (এই সময়)