• কতটা পথ পেরোলে তবে সিপি হওয়া যায়, সচেতনতার পাঠ পড়ুয়াদের
    এই সময় | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ‘স্যর, কী করলে আপনার চেয়ারে বসতে পারব?’

    প্রশ্নকর্তা, ক্লাস টেনের পড়ুয়া আদিত্য পাসওয়ান। উল্টোদিকের চেয়ারে বসে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। বুধবার বউবাজারের সেন্ট স্টিফেনস স্কুলের পড়ুয়াদের সাইবার সুরক্ষা থেকে ট্র্যাফিক সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মনোজ। হাজির ছিলেন ডেপুটি কমিশনার(সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ও।

    আদিত্যর প্রশ্ন শুনে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘জীবনে নাম হবে, প্রচুর টাকার মালিক হবে, সকলে এক ডাকে চিনবে, এমন স্বপ্ন না দেখে নিজের কাজটা ভালো ভাবে করে যাও। লক্ষ্য স্থির রাখো। কঠোর পরিশ্রম করো। কারণ, পরিশ্রমের কোনও বিকল্প নেই। তাহলেই টাকা, পরিচিত সব পাবে।’

    সিপিকে সামনে পেয়ে ক্লাস নাইনের পড়ুয়া আসমা টাগালা জানতে চায়, ‘স্যর, পুলিশে চাকরি করলে মেয়েদের কী ধরণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?’ সিপি জানান, প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়েদের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকে না। ভিড় নিয়ন্ত্রণ, প্রবীণদের পাশে থাকা, যে কোনও দুর্ঘটনা বা খুনের তদন্ত কোন পথে এগোতে হয়, সবই শেখানো হয় প্রশিক্ষণে।

    এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই পড়ুয়াদের কাছে পুলিশ কমিশনার জানতে চান, সপ্তাহে কত ঘণ্টা খেলার মাঠে সময় দেয় তারা? মোবাইল ফোনে কতক্ষণ কাটে? উত্তরে হাতে গোনা কয়েকজন পড়ুয়া জানায়, সপ্তাহে ৫–৬ ঘণ্টা মাঠে কাটায় তারা। তবে, ফোনের ব্যবহার প্রসঙ্গে কোনও পড়ুয়ার কাছে স্পষ্ট কোনও জবাব পাননি পুলিশ কমিশনার। এরপর তিনি পড়ুয়াদের বলেন, ‘ফোন ব্যবহারের বিপক্ষে আমি নই। কারণ, ফোনের মাধ্যমে এক মুর্হূতে অনেক অজানা তথ্য জানা যায়। ফোনকে জ্ঞান বাড়ানোর কাজে ব্যবহার করতে হবে।’

    বর্তমানে ভিডিয়ো কলে পুলিশের নাম করে ডিজিট্যাল অ্যারেস্টের মতো প্রতারণা বাড়ছে শহরে। এই ধরণের সাইবার অপরাধ থেকে সতর্ক থাকতে গেলে কী করণীয়, সে বিষয়েও পড়ুয়াদের বেশ কিছু পরামর্শ এদিন দিয়েছেন মনোজ। তাঁর কথায়, ‘মনে রাখবে কোনও তদন্তের জন্য পুলিশ কাউকে ভিডিয়ো কল করে না। ফোনে অনেক সময় অপরিচিত নম্বর থেকে লিঙ্ক আসে—এই ধরনের লিঙ্কে কখনও ক্লিক করবে না। কারণ, এটি প্রতারণার একটি ফাঁদ হতে পারে। যা তোমার ব্যক্তিগত বা আর্থিক তথ্য চুরির কারণও হতে পারে।’

    একই সঙ্গে সাইবার অপরাধের শিকার হলে দ্রুত স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শও পড়ুয়াদের দিয়েছেন মনোজ। স্কুলের সম্পাদক ইমরান জাকি বলেন, ‘আজকের আলোচনাসভা পড়ুয়াদের শিক্ষামূলক ও ভাবনাচিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। একজন শীর্ষ পুলিশ কর্তার কাছ থেকে আইন ও নিরাপত্তার বিষয়গুলি বোঝার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে পড়ুয়াদের সামাজিক দায়বদ্ধতা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)