• 'রাজ্য পতাকা'র দাবি TMC-র মনোরঞ্জনের, BJP-র প্রশ্ন - 'এরপর পৃথক নোট ছাপনো হবে?'
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গের নিজেস্ব রাজ্য সঙ্গীত আছে। এদিকে আছে রাজ্য দিবসও। এবার পশ্চিমবঙ্গের জন্যে পৃথক পতাকার দাবি তুললেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এদিকে মনোরঞ্জনের এহেন দাবি সামনে আসতেই হইচই শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর প্রায় ৭ দশক পশ্চিমবঙ্গের কোনও রাজ্য সঙ্গীত বা দিবস ছিল না। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সঙ্গীত এবং রাজ্য দিবস শুরু করেন। বর্তমানে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এদিকে পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই আবহে বুধবার বিধানসভায় বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী রাজ্য পতাকা চালুর দাবি তোলেন। সেই সময় অবশ্য বিধানসভার অন্দরে বিজেপির কোনও বিধায়ক ছিলেন না। তাই এই নিয়ে অধিবেশন কক্ষে হইচই হয়নি। তবে মনোরঞ্জনের দাবির কথাটি প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।


    রিপোর্ট অনুযায়ী, বিধানসভায় সেই সময় অধিবেশন পরিচালনা করছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় বক্তব্য রাখছিলেন মনোরঞ্জন। বিধানসভায় নাকি বলাগড়ের বিধায়ক বলেন, 'যেকোনও জাতি বেঁচে থাকে তার ভাষা, সাহিত্য এবং সংস্কৃতির জন্য। বাঙালি জাতি এবং সাহিত্যের গুরুত্ব সারা পৃথিবী স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারও এর গুরুত্ব বিবেচনা করে বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়েছে। ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে আমি যাই। আমরা দেখেছি তাদের নিজস্ব রাজ্য সঙ্গীত আছে। এবং নিজেদের একটা পতাকাও আছে, রাজ্য পতাকা। এতদিন আমাদের কোনও রাজ্যে সঙ্গীত ছিল না। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাদের একটি রাজ্য সঙ্গীত দিয়েছেন। রাজ্যবাসী তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকবে অবশ্যই। কিন্তু আমাদের রাজ্যের কোনও পতাকা নেই। অন্যত্র যখন যাই, তাদের যখন পতাকা দেখি, আমাদের মুখটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, যদি আমাদের একটা পতাকা হয়।'


    উল্লেখ্য, ভারতের কোনও রাজ্যের এমন পৃথক পতাকা নেই। ২০১৯ সালের আগে শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরের পৃথক পতাকা ছিল। তবে ৩৭০ ধারা রদের সঙ্গে সঙ্গে সেখানে 'রাজ্য পতাকা' হিসেবে অস্তিত্ব শেষ হয়। এদিকে কর্ণাটকের বহু জায়গায় কন্নড় জাতির নিশান হিসেবে লালহলুদ পতাকা উড়তে দেখা যায়। তবে তা রাজ্য পতাকা নয়। এমন ভাবে আমেরিকার ৫০টি রাজ্যের ৫০টি পৃথক পতাকা আছে। অবশ্য সেই দেশের গঠন কাঠামো ভিন্ন। সেখানে প্রতি রাজ্যের পৃথক সংবিধানও রয়েছে। তবে ভারতের বিষয়টি ভিন্ন। এই আবহে পশ্চিমবঙ্গের জন্যে পৃথক পতাকার দাবি জানানোয় মনোরঞ্জনের বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক।


    বিজেপির তরফ থেকে ইতিমধ্যেই মনোরঞ্জনের দাবি ঘিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তিনি কি দেশভাগ চান? এই বিষয়ে শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'সরকারিস্তরে এই ধরনের কোনও প্রস্তাব বা বক্তব্য আমাদের কাছে পৌঁছয়নি। আমর মনে হয় আমার মনে হয় মনোরঞ্জনবাবু ওঁর দলে এই মুহূর্তে একটু কোণঠাসা আছেন। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী এই ধরনের কথায় খুশি হন। ওঁর অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। তবে সেই স্বপ্ন আর নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী না হয়েও প্রধানমন্ত্রীর মতো সুখ ভোগ করার যে সুপ্ত মনোবাসনা, সেটাকে একটু সামনে নিয়ে আসেন। এর পরে ওরা হয়ত আলাদা নোট ছাপার কথাও বলতে পারে ৷ কারণ, তৃণমূল মানেই তো নোটের ব্যাপার। ফলে পতাকা কেন, নোটের কথাও ওরা বলতে পারে।'
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)