• দত্তপুকুরে মাথা কেটে নৃশংস খুনের ‘মোটিভ’ কী ছিল? খোলসা করল বারাসত পুলিশ
    এই সময় | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • চুরির মালের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে মাঝেমধ্যেই গোলমাল হতো। দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভের বারুদ জমছিল। তাতেই স্ফুলিঙ্গের কাজ করে স্ত্রীকে শারীরিকভাবে হেনস্থার ঘটনা। মাথায় খুন চেপে যায় জলিল ও সুফিয়ার। দত্তপুকুরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ‘মোটিভ’ ছিল এটাই। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মলেন করে জানালেন বারাসাত পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া।

    গত ৩ ফেব্রুয়ারি দত্তপুকুর থানার বাজিতপুরে কৃষি জমির পাশের মাঠে মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার হয় হজরত লস্করের। ১৫ দিন পর উদ্ধার হয় তাঁর মুণ্ডও। ঠিক কী কারণে জলিল ও সুফিয়া এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিল, তার উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছিল পুলিশ।

    পুলিশ জানায়, মাঝেমধ্যেই হজরত, জলিল ও সুফিয়ারা একসঙ্গে বাড়িতে মদ্যপানের আসর বসাতো। সেখানে চুরির মালের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে নানা অশান্তি লেগেই থাকত। এর পাশাপাশি জলিলের স্ত্রী সুফিয়া হজরতের যৌন লালসার শিকার হয়েছে বলে জেরায় দাবি করেছে জলিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই জলিল ও সুফিয়া মিলে হজরতকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা শুরু করে। খুনের পরে ধড় থেকে মুণ্ড কেটে ব্যাগে ভরে বামনগাছি স্টেশন লাগোয়া কচুরিপানা ভর্তি ডোবায় ফেলা হয়।

    ৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধারের পর চাষের ক্ষেতে পুলিশ ও গ্রামবাসীরা জড়ো হলে ভিড়ের মধ্যে জলিল নিজেও উপস্থিত ছিল। জলিলের ভেবেছিল ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে মুণ্ড ফেলায় পুলিশ হদিশ পাবে না। তাই যখন মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় এলাকায়, তখন নিশ্চিন্তে স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতেই স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিল জলিল। কিন্তু তাল কাটে হজরতের স্ত্রীর ফোনে। জলিলের স্ত্রীকে ফোন করে হজরতের স্ত্রী তাঁর স্বামীর খোঁজ জানতে চান। কারণ, ঘটনার দিন বাড়ি থেকে বেরনোর সময় হজরত তাঁর স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, তিনি জলিলের বাড়ি যাচ্ছেন। কিন্তু সুফিয়া জানায়, জলিল বাড়িতে নেই। এমনকী হজরতের বিষয়েও তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

    এর পরেই অভিযুক্ত জলিল বিপদ বুঝে জম্মুতে পালানোর পরিকল্পনা করে। সেই মতো ৪ ফেব্রুয়ারি সকালে বামনগাছি রেল স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে কলকাতা স্টেশনে পৌঁছে সেখান থেকে ট্রেনে করে জম্মু পৌঁছয়। জলিল সর্বদা মোবাইল ফোনে হজরতের খুনের আপডেট খবরের দিকে নজর রেখেছিল বলেই জানতে পেরেছে তদন্তকারীরা। সুফিয়ার সঙ্গেও হোয়াটসঅ্যাপ কলে ঘটনার বিষয়ে খবর নিত সে। সুফিয়া গ্রেপ্তার হতেই জম্মুর আস্তানা বদলে পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন সাম্বা গ্রামে আশ্রয় নেয় এই জলিল। সেখান থেকেই পুলিশের বিশেষ দল তাকে গ্রেপ্তার করে।

  • Link to this news (এই সময়)