• রয়েছে পথবাতি-হাইমাস্ট, তবু অন্ধকারে ২৫০ কোটির রাস্তা
    এই সময় | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার

    যে রাস্তা গোটা উত্তর–পূর্ব ভারতকে বাংলার সঙ্গে জুড়েছে সেই জাতীয় সড়ক অন্ধকারে। দিনের আলো ফুরোলেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে যায় সড়ক, গুরুত্বপূর্ণ নদী–সেতু। শুধুমাত্র বিদ্যুতের বিল কী ভাবে দেওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্তের জেরে এই পরিস্থিতি। অথচ এই সড়ক দিয়ে যেতে হলে টোলপ্লাজায় দিতে হচ্ছে খাজনা।

    শিলিগুড়ির কাছে করোনেশন ব্রিজ থেকে শুরু হওয়া এই রাস্তা উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে অসম হয়ে চলে গিয়েছে অরুণাচল প্রদেশে। এ রাজ্যে এনএইচ–১৭ রয়েছে কোচবিহার জেলার পুন্ডিবাড়ি থেকে অসম সংলগ্ন কোচবিহারের জোড়াই মোড় পর্যন্ত। রাস্তার দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটার। আড়াইশো কোটি টাকার রাস্তার কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। শেষ হয় ২০২০ সালে।

    রাস্তা তৈরির সময়ে পথবাতি থেকে হাইমাস্ট সবই লাগানো হয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে, গুরুত্বপূর্ণ চেকপোস্ট মোড় হাইমাস্ট জ্বলে না। মারুগঞ্জ, চিলাখানা এলাকার উপরে থাকা নদীসেতুও অন্ধকারে। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে বহিরাগতরা জড়ো হয়ে নেশা করছে সেতুতে। এমনকী চুরি–ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটছে। যে কোনও সময়ে নাশকতার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কী কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ করা সম্ভব হয়নি?

    সেই উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা গিয়েছে, রাস্তাটি তৈরি করার সময়ে যে এজেন্সি কাজ করেছিল তাতে পথবাতি, হাইমাস্ট সব কিছুই লাগানোর বিষয় ডিপিআর–এ ছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার পরে তার বিল কী ভাবে দেওয়া হবে তা নিয়ে কোনও নির্দেশ ছিল না।

    পরবর্তীতে জাতীয় সড়ক ১০ ডিভিশন থেকে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সড়ক মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে বিষয়টি জানানো হয়। তারা বিদ্যুতের খরচ প্রতি মাসে এবং বছরে কত টাকা লাগবে সেটা জানতে চায়। সেই মতো এখান থেকে রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানিকে দিয়ে সার্ভে করে একটি হিসেব দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দু’বছরের বেশি সময় ধরে সেই ফাইল আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ।

    এই রাস্তার উপরে থাকা চেকপোস্টের পাশে ছোট্ট চায়ের দোকান রয়েছে বিপিন বর্মনের। তাঁর কথায়, রাস্তা হলো, হাইমাস্ট লাগানো হলো, কিন্তু আলো এল না। কী কারণে তা বলতে পারব না। রাতে অন্ধকারে নানা রকম উৎপাত বেড়েছে এটুকু শুধু বলতে পারি।’

    পঞ্জাবের বাসিন্দা লরিচালক ভূপিন্দর সিং বলেন, ‘বছরে অন্তত দু’বার উত্তর-পূর্বের এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এখানে বেশ কয়েকটি টোল প্লাজায় টাকা দিয়ে তারপরে যেতে হয়। কিন্তু রাস্তা অন্ধকার। এই বিষয়টি দেখা উচিত।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় সড়ক ১০–এর এক ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)