'এটা কি রাজ্যের কোনও মামলা?' কল্যাণ নিয়ে bangla.aajtak.in-এ ক্ষোভ উগরে দিলেন রত্না
আজ তক | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বেহালা পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহবিচ্ছেদ মামলা এক নতুন মোড় নিয়েছে। এতদিন আলিপুর আদালতে চলা এই মামলা হঠাৎই কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছে যায়। বুধবার বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলাটির শুনানিতে শোভনের হয়ে সওয়াল করেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলার পরবর্তী শুনানি শুক্রবার নির্ধারিত হয়েছে।
এই ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'আমারই দলের সাংসদ আমার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন, এটা ভাবাই যায় না। শোভন তো বিজেপিতে গিয়েছিল, এখন মনে হচ্ছে দল ওর পাশেই রয়েছে। রাজ্যের কোনও বড় সমস্যা নয়, তবুও দলের সাংসদকে ওর পক্ষে দাঁড় করানো হয়েছে— এটা মেনে নেওয়া কঠিন।'
রত্না আরও জানান, একসময় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তিনি রত্নার হয়ে লড়বেন। 'কল্যাণদা তখন বলেছিলেন, তুই কোনওভাবেই ডিভোর্স দিবি না, আমি তোর পাশে আছি। আজ তিনি শোভনের পক্ষে সওয়াল করছেন, তবে আমি নিশ্চিত ন্যায়ের জয় হবেই,' মন্তব্য করেন রত্না।
বিষয়টিতে কল্যাণ বন্দ্য়োপাধ্যায় বললেন, 'আমি পেশাদার আইনজীবী। শোভন আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত। তাই মামলা নিয়েছি। এতে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। রত্না তো আমার কাছে আসেনি। তাছাড়া ওর পাশে তো ফিরহাদ হাকিম, মলয় ঘটক, অরূপ বিশ্বাস-সহ অনেক মন্ত্রী রয়েছেন।'
উল্লেখ্য, শোভন নিজেই বিবাহবিচ্ছেদের মামলা দায়ের করেছিলেন। রত্না প্রথম থেকেই বিচ্ছেদের বিরোধিতা করে আসছেন। শোভন অভিযোগ করেছিলেন, রত্না ইচ্ছাকৃতভাবে শুনানি বিলম্ব করাচ্ছেন। পাল্টা যুক্তি দেন রত্নাও। নিম্ন আদালতের সাম্প্রতিক নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রত্না হাই কোর্টে যান এবং সেই মামলায় শোভনের পক্ষে সওয়াল করেন কল্যাণ।
শোভন একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। পরে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও, বিধানসভা ভোটের পর পদ্মশিবিরের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর। এরপর তিনি কার্যত রাজনীতি থেকে সরে আসেন। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক অটুট রেখেছেন মমতার সঙ্গে। প্রতি বছর ভাইফোঁটায় কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে দিদির আশীর্বাদ নিয়েছেন তিনি।
শোভনের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব ঘুচে যাওয়া এখন দলের অন্দরমহলে ওপেন সিক্রেট। বিশেষ করে, কল্যাণের এই সওয়াল তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে। দলের একাংশের দাবি, কল্যাণ বিনা অনুমতিতে শোভনের পক্ষে দাঁড়াননি। যদিও তৃণমূলেরই আরেকটি অংশ এখনও শোভনের দলে ফেরা নিয়ে বিরোধিতা করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলের ভরকেন্দ্রে পরিবর্তন এবং অভ্যন্তরীণ নেতৃত্বের সমীকরণ বদলায় শোভনকে ঘিরে নতুন জল্পনা উসকে উঠেছে।