• ছয় ব্যবসা ছিল দুই ভাইয়ের, সবেতেই লস? ট্যাংরার ৩ মৃত্যুর পিছনে কি আদৌ আর্থিক অনটন
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • HT Bangla Exclusive: ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ট্যাংরায় খুন করা হয়েছে দুই বধূ ও এক মেয়েকে। কিন্তু, প্রাথমিক জেরায় দে পরিবারের দুই ভাই পুলিশকে জানান, আর্থিক অনটনের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সত্যিই কি ট্যাংরার ৩ মৃত্যুর পিছনে আর্থিক অনটন দায়ী? খোঁজ করল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। 

    একটি নয়, মোট ছয়টি সংস্থা ছিল দে পরিবারের নামে । অর্থাৎ ছয়টি আলাদা আলাদা সংস্থার নামে চলত পারিবারিক ব্যবসা। প্রয়াত প্রদীপকুমার দের ব্যবসাই বড় করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন দুই পুত্র প্রণয় দে ও প্রসূন দে । তবে শুধু একটি সংস্থা নয়, ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ছয়টি সংস্থার ডাইরেক্টর পদে বসেছেন দুই ভাই। বসিয়েছেন পরিবারের আত্মীয়দেরও।হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার তরফে এই প্রতিটি সংস্থার তথ্য খতিয়ে দেখা হল।

    কোটি কোটি অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল প্রায় প্রতি সংস্থাতেই। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসাগুলির ভরাডুবিও হচ্ছিল। এর কিছুটা ধরা পড়েছে সংস্থার বার্ষিক মূল্যায়নে। আবার কিছুটা জানিয়েছেন দুর্ঘটনার পর উদ্ধার হওয়া দুই ভাই। HT বাংলার তদন্তে উঠে এসেছে মোট ছয়টি সংস্থার নাম‌। এর মধ্যে সর্বশেষ সংস্থার ব্যবসায় দুই ভাই মনপ্রাণ ঢেলেছিলেন — ‘প্রোটেকটিভ লেদার গ্লাভস প্রাইভেট লিমিটেড’। এছাড়া অন্যান্য সংস্থাগুলি হল — রূপপুর কৃষি ও রেশম কো প্রাইভেট লিমিটেড, পেলিকান এন্টারপ্রাইজেস প্রাইভেট লিমিটেড, এবিজি টাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড, সানগোল্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড, পিকে গ্লাভস প্রাইভেট লিমিটেড।


    পরিবারের দুই ভাই মূলত ব্যবস চালালেও অনেক সদস্যই ডাইরেক্টর পদে যোগ দিয়েছিলেন, সম্ভবত ভাইদের অনুরোধেই। দে পরিবারের বধূ, প্রণয়-প্রসূনের কাকিমা নমিতা দে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে জানান, তাঁকে ডাইরেক্টর পদে রাখা হলেও ব্যবসা দুই ভাইই দেখভাল করত। তিনি ব্যবসার কিছুই জানতেন না। বাড়ির মেয়েদের ওসব নিয়ে মাথা ঘামাতে বলা হয়নি কখনও।

    পরিবারের বেশ কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে ডাইরেক্টরদের তালিকায়। এর মধ্যে প্রণয় দে, প্রসূন দে তো রয়েছেনই, সঙ্গে নাম রয়েছ নমিতা দে । প্রণয়দের বাবা ৭-৮ বছর ও মা ৩ বছর আগে প্রয়াত হয়েছিলেন। এঁদের নাম বাদে একমাত্র জনের নামই পাওয়া গিয়েছে যিনি দে পরিবারের সদস্য নয় বলে অনুমান — তাঁর নাম সুরজিৎ সাউ। সানগোল্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড ও এবিজি টাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের ডাইরেক্টর পদে তিনি আসীন।

    প্রতিবেশী ও পরিচিতদের কথায়, দে পরিবারের সকলেই ছিলেন চাপা প্রকৃতির। ফলে পরিবারে যে আর্থিক অনটন চলছে, সে কথা জানতে পারেননি কেউ। ব্যবসায় বা কর্মক্ষেত্রে ক্ষতি বা ভরাডুবি হলে স্বাভাবিক নিয়মে দেনা বাড়বার কথা। দেনার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন পাওনাদাররা। গত বছর দে ব্রাদার্সের ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ করার আবেদনও উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমে। এদিকে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে ওয়েবলেক ইন্ডিয়া প্রাইভেটের লিমিটেডের কর্মীরা জানাচ্ছেন, ২০২৪ সালেও তাদের সঙ্গে ব্যবসা করেছেন দে ব্রাদার্স। সংস্থাটির অফিস দে বাড়ির ঠিক পাশের বহুতলেই। অন্যদিকে প্রোটেকটিভ লেদার গ্লাভস সংস্থার বর্তমান ডিলার আনাস মহম্মদও একই কথা জানান হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে। ঘটনাচক্রে এই সংস্থাটিই ছিল দে পরিবারের শেষ ব্যবসায়িক সংস্থা। তাই সংস্থার ব্যাপারে বিশদে জানতে চাইলেও কথা বলতে চাননি বর্তমান ডিলার।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)