‘মানুষ মরে গেলে আপনাদের ঘুম ভাঙবে?’ কলকাতা পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কলকাতা শহরে হেলে পড়ছে বাড়ি। ২০২৫ সালের শুরু থেকে এই দৃশ্য দেখা যেতে শুরু করেছে। তাতে কলকাতার মানুষজনের মধ্যে আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। এইসব ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুরসভা দুটি জিনিস বুঝতে পারে। এক, বেআইনি নির্মাণ হয়েছে শহরে। দুই, জলাজমি অথবা পুকুর বুজিয়ে বহুতল নির্মাণ করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভার আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আবার শহরে বেআইনি বহুতল গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। আর সেখানে কলকাতা পুরসভার ভূমিকা নিয়ে মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি চলাকালীন কলকাতা পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করল আদালত।
কলকাতা পুরসভা অনেক ক্ষেত্রেই কড়া পদক্ষেপ করেছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই বিষয়ে বিল্ডিং বিভাগকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা পুরসভা এবং কলকাতা পুলিশকে জানিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি বলেই মামলা করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। আর আজ ওই মামলাতেই বেনিয়াপুকুর এলাকার ঘটনায় কলকাতা পুরসভাকে তীব্র ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট। বিষয় একটাই—‘বেআইনি নির্মাণ’। মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে টক টু মেয়র অনুষ্ঠানে নানা সময়ে শুনতে হয়েছে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে। খবরও দেওয়া হয়েছে এই শহরে কোথায় বেআইনি নির্মাণ হয়েছে তা নিয়ে।
মেয়র একদিকে পদক্ষেপ করছেন বেআইনি নির্মাণ রুখতে। কিন্তু অপরদিকে বেআইনি নির্মাণ হয়েই চলেছে। সুতরাং একটা সমন্বয়ের অভাব আছে বলে মনে করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে বেনিয়াপুকুরের বিষয়টি নিয়ে মামলা ওঠে। ওই মামলাতেই কলকাতা পুরসভাকে ভর্ৎসনা করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মানুষ মরে গেলে আপনাদের ঘুম ভাঙবে?’ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভাকে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, বেনিয়াপুকুর থানার ঠিক বিপরীত দিকে সরু গলি আছে। সেই গলির মধ্যে বেআইনিভাবে একটি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। মামলাকারীর এই বিষয়ে বক্তব্য, সরু গলির মধ্যে এভাবে একটা বহুতল নির্মাণ করে ফেলা বেআইনি। শুধু তাই নয়, এই নির্মাণের ফলে যে কোনওদিন অঘটন ঘটতে পারে। যদি সেটা ঘটে তাহলে সেখানে উদ্ধারকার্য করাও সম্ভব হবে না। এই বিষয়ে মামলাকারীর অভিযোগ, কলকাতা পুরসভাকে আবেদন বেআইনি নির্মাণের বিষয়ে জানালেও পুরসভার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘কাজ যেমন চলছে চলুক। পরে দেখে নেওয়া হবে।’ এই মন্তব্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এখন দেখার, কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার পর কলকাতা পুরসভা কী রিপোর্ট জমা করে।