ব্যাপক হারে কমেছে সিপিএমের সদস্য সংখ্যা, সম্মেলনের সাংগঠনিক রিপোর্টে উদ্বেগ
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নির্বাচনে তো শূন্যতায় পৌঁছেই গিয়েছে। এবার লোকবল এবং পকেটেও টান পড়েছে। আর এটা ঘটেছে সিপিএমে। কোনও নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত সাফল্য আসেনি। সদস্যরা ধীরে ধীরে পাতলা হয়েছে। লেভি আসা কমে গিয়েছে। প্রত্যেক জেলাতেই সদস্য সংখ্যা কমেছে। আর সব মিলিয়ে গত তিন বছরে এই রাজ্যে সিপিএমের পার্টি সদস্য কমেছে ২৫ হাজার। আর তা নিয়ে রাজ্য সম্মেলনের সাংগঠনিক প্রতিবেদনে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। সুতরাং আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় অনেকটা পিছন থেকে লড়াই করতে হবে সিপিএমকে। সেখানে জোট হলে একরকম। আর জোট না হলে চতুর্মুখী লড়াই।
এই পিছনে থেকে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা সিপিএমের পক্ষে বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জ। সিপিএম সূত্রে খবর, রাজ্য সম্মেলনের সাংগঠনিক প্রতিবেদনের ৪০ নম্বর পৃষ্ঠায় বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। প্রত্যেক বছরের একটা তথ্য দেওয়া এবং সদস্যপদ পাওয়ার এক বছরের মধ্যে পার্টি সদস্য তলানিতে যাওয়ার সংখ্যাও তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও সেখানে দাবি করা হয়েছে, পার্টি সদস্যের অন্তর্ভুক্তি বেশি। ওই প্রতিবেদনের ৪২ নম্বর পৃষ্ঠায় ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পার্টি সদস্য সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ২০২২ সালে পার্টির সদস্যপদ খারিজ হয় ১১ হাজার। মোট সদস্য সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৫৪ হাজার। ২০২৩ সালে ৫৮০০ সদস্যপদ খারিজ হয়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৫৭ হাজার। আর ২০২৪ সালে ৮৪০০ সদস্যপদ খারিজ হয়ে সদস্য সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৬০০ দাঁড়ায়।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর সিপিএম বাংলায় শূন্য হয়েছে। তারপর পঞ্চায়েত, পুরসভা, লোকসভা এবং উপনির্বাচনেও সাফল্য পায়নি। তাই শূন্যতা কাটেনি। রাজ্য পার্টি বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বললেও তাতে লাভ হয়নি। তরুণ প্রজন্মকে ভোটে দাঁড় করিয়েও কিছু ভাল ঘটেনি। বরং তাঁদের সাংগঠনিক নেতৃত্বে না নিয়ে এসে বৃদ্ধতন্ত্রে ভরসা রেখেছে মুজফফর আহমেদ ভবন। আর এখন দেখা যাচ্ছে ভোট তো কমেছে, সদস্য সংখ্যাও কমেছে। দলের সদস্যপদ পূনর্নবীকরণের কাজ শেষে হতেই এই তথ্য চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বঙ্গ–সিপিএম নেতাদের। পার্টির সদস্য সংখ্যা কমেছে বলে নানা ধরনের কমিটিও নানা জায়গায় নিষ্ক্রিয় হয়েছে।
জেলা সম্মেলন সব জেলাতে হলেও অনেক জায়গাতেই এখনও ক্ষোভ রয়ে গিয়েছে। এই আবহে রাজ্য সম্মেলনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কংগ্রেস বা আইএসএফ সারা বছর আন্দোলনে সিপিএমের সঙ্গে থাকে না। কিন্তু নির্বাচনের সময় আসনরফা করতে হয়। এতে দলের অন্দরেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বুথ স্তরে যে সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে সেটা কাটাতে ব্যর্থ হয়েছে দল। আর বুথে সাংগঠনিক দুর্বলতার জেরেই নির্বাচনী বিপর্যয় ঘটে চলেছে। বহু নেতার মধ্যে লড়াইয়ের কোনও উদ্যোগ নেই। বুথে লড়াই করার মতো নেতাও নেই। যদিও দলের তরুণ প্রজন্মের নেতাদের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতা আছে।