দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল ঘরে এল, কেন্দ্রীয় সরকার বিপুল টাকা দিল রাজ্যের খাদ্য দফতরকে
হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বাংলার নানা প্রকল্পের টাকা বকেয়া আছে কেন্দ্রের কাছে। তা নিয়ে প্রায়ই সুর চড়িয়ে থাকেন তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধায়ক–সাংসদরা। সংসদে একদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অপরদিকে রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হয়েছেন। তারপরও একের পর এক প্রকল্পের টাকা মেলেনি। বরং সেসব দায়িত্ব রাজ্য সরকারকেই নিতে হয়েছে। তার জেরে কেন্দ্রীয় সরকারের বাংলাকে বঞ্চনার বিষয় সামনে চলে আসে। এই আবহে এবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পাওনা টাকার একাংশ বহুদিন পর পেল খাদ্য দফতর। কেন্দ্রের থেকে ৭৪০০ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর।
একশো দিনের কাজের টাকা বকেয়া রয়েছে। যে টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে গ্রামীণ মানুষজনকে। আবাস যোজনার টাকা মেলেনি। রাজ্য সরকার ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে সেই টাকা দেওয়া শুরু করেছে। এমনকী এবারের রাজ্য বাজেটে পথশ্রী প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকা প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তা রয়েছে। সেটাও মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণ করবে রাজ্য সরকার এই পথশ্রী প্রকল্পের মধ্য দিয়ে। ২০২৩–২৪ আর্থিক বছর পর্যন্ত খাদ্য সরবরাহ খাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি পাওনা রয়েছে খাদ্য দফতরের। তার মধ্যে ৭৪০০ কোটি টাকা এসেছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। এই টাকা পেয়ে খানিকটা উপকার হবে।
এই টাকা পাওয়ার পিছনে কারণ আছে। সেটি হল, কৃষকদের কাছ থেকে রাজ্য সরকার ‘সেন্ট্রাল পুল’–এর জন্য ধান কিনে চাল উৎপাদন করেছিল। আর তার খরচ কেন্দ্রীয় সরকারেরই দেওয়ার কথা। সেখানে যে টাকা এসেছে তা রাজ্য সরকারের পাওনা ছিল। এই টাকাই নানা অভিযোগ দেখিয়ে আটকে রাখা হয়েছিল। সুতরাং রাজ্যের পুরো টাকা পেতে দেরি হয়। কেন্দ্রীয় সরকার দেরি করছিল বলে রাজ্য সরকারের কোষাগারে চাপ পড়ছিল। এবার তা মিলল। তাও বহুদিন পর। এখনও ৪ হজার ৬০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। সেটা কবে মিলবে জানা যায়নি।
তবে জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে রেশন গ্রাহকদের চাল ‘সেন্ট্রাল পুল’ থেকে সরবরাহ করা হয়। যেখানে সাহায্যকারীর ভূমিকায় থাকে রাজ্য সরকার। রেশন দোকান চালানোর জন্যও খরচের অর্ধেক অংশ কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। সেখানে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করলেও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা মেটানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও টাকা দিতে দেরি করা হচ্ছে বলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তোলা হয়েছে অভিযোগ। পাওনা টাকা মেটানোর জন্য বহুদিন ধরে রাজ্য সরকার চিঠি চালাচালি করেছে। কিছু বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কথা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর তা কেন্দ্রকে জানানোও হয়েছিল। অবশেষে মিলল পাওনা টাকার একাংশ। বাকি অংশও মিলবে বলে আশাবাদী খাদ্য দফতর।