ট্যাংরাকাণ্ডে দে পরিবারের জীবিত এক কিশোর-সহ তিন পুরুষ সদস্য ভর্তি রয়েছেন বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে। তিন জনকেই রাখা হয়েছে আইসিইউ-তে। তাঁরা যে গাড়িতে ছিলেন, সেটি বাইপাসের ধারে অভিষিক্তার কাছে একটি স্তম্ভে সজোরে ধাক্কা দিয়েছিল। গুরুতর আহত হন তিন জনই। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪৩ বছরের প্রসূন দে-র পাঁজরের বেশ কয়েকটি হাড় ভেঙে গিয়েছে। কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত যে হাড় (আলনা) রয়েছে, তা সরে গিয়েছে। অর্থোপেডিক সার্জন, প্লাস্টিক সার্জনের অধীনে তাঁর চিকিৎসা চলছে। প্রসূনের দাদা প্রণয় দে আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণে শরীরে গুরুতর চোট-আঘাত লেগেছে। পিলারে গাড়ির ধাক্কার অভিঘাতে তাঁর কোমরের হাড় ভেঙে গিয়েছে। দুর্ঘটনার সময়ে গাড়ির ড্যাশবোর্ডের সঙ্গে হাঁটুর ধাক্কায় এ রকম হতে পারে। বাঁ পায়ের নীচের অংশে ‘পিন ট্রাকশন’ দেওয়া হয়েছে। অস্থি বিশেষজ্ঞ-সহ বেশ কয়েক জন চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসা করছেন। ১৪ বছরের কিশোরের শরীরেও রয়েছে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন। তার ডান বাহু, আলনা ভেঙে গিয়েছে। কব্জি এবং গলায় গুরুতর চোট লেগেছে।
বুধবার অভিষিক্তা মোড়ের কাছে একটি স্তম্ভে ধাক্কা দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায় একটি গাড়ি। তাঁর ভিতরেই ছিলেন প্রণয়, প্রসূন এবং ওই কিশোর। তাঁদের সূত্রে জানা যায়, ট্যাংরার অটল শূর রোড এলাকায় দে পরিবারের বাড়িতে পড়ে রয়েছে এক কিশোরী-সহ তিন মহিলার দেহ। দুই মহিলার নাম রোমি দে এবং সুদেষ্ণা দে। আহতেরা দাবি করেন, আর্থিক সমস্যার কারণে একসঙ্গে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। এর পরে কিশোরকে নিয়ে দু’জন পুরুষ গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। তাঁদের দাবি, আত্মহত্যার উদ্দেশ্যেই স্তম্ভে ধাক্কা দেন। তিন জনই হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। অন্য দিকে, মৃত তিন জনের ময়নাতদন্তের রিপোর্টও হাতে এসেছে পুলিশের।
দে পরিবারের চামড়ার ব্যবসা রয়েছে। রয়েছে একটি কারখানাও। মঙ্গলবারও খোলা ছিল সেই কারখানা। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, বুধবার তা বন্ধ ছিল। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দে পরিবারের আর্থিক সমস্যার কথা বাইরে থেকে বোঝা যায়নি। এক কিশোরী-সহ তিন মহিলার ময়নাতদন্ত যখন চলছিল বৃহস্পতিবার সকালে, তখন পরিবারের ঘনিষ্ঠেরা বলেন, ‘‘আমরা সব জানি। আপনাদের বলতে পারছি না। এটা আমাদের মধ্যেই থাকতে দিন।’’