• মেয়ে-বউদের মৃতদেহের সঙ্গে কতক্ষণ কাটিয়েছিলেন ট্যাংরার দে পরিবারের ছেলেরা?
    এই সময় | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ট্যাংরায় একই পরিবারের তিন জনের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্যের গিঁট যেন খুলেও খুলছে না। একাধিক প্রশ্ন উঠেছে, যার উত্তর এখনও ধোঁয়াশায় ঢাকা। একই পরিবারের তিন জনের মৃত্যু এবং তিন জনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘিরে নানা প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। বাজারে কোটি কোটি টাকার ঋণের জালে জড়িয়ে সত্যি কি বাড়ির ৬ জনই মরতে চেয়েছিলেন? নাকি রীতিমতো পরিকল্পনা করে মারা হয়েছে বাড়ির তিন মহিলা সদস্য সুদেষ্ণা দে, রোমি দে ও প্রিয়ংবদা দে-কে। তিনটি পৃথক ঘর থেকে উদ্ধার হয় দেহ তিনটি।

    পুলিশ সূত্রে খবর, বাজারে কোটি, কোটি টাকার ঋণ রয়েছে এই ব্যবসায়ী পরিবারের। একাধিক এজেন্সি, বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছিল দে পরিবার। এমনকী ২১/সি অটল শূর রোডের বিশাল বাড়িটিও বন্ধক রাখা হয়েছিল বলে খবর। কিন্তু এর পরও ঋণ শোধ করতে পারেনি।

    প্রথম থেকেই এই ঘটনায় আত্মহত্যার একটা তত্ত্ব সামনে আসছে। অথচ ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট এসেছে বৃহস্পতিবার। সেখানে স্পষ্ট ইঙ্গিত খুনের। হাতের শিরা কাটা, গলায় ধারাল অস্ত্রের কোপ, সব মিলিয়ে চরম নৃশংসতা। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ময়নাতদন্ত হওয়ার ৩৬ থেকে ৪৮ ঘণ্টা আগে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

    তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে বুধবার সকালে। ময়নাতদন্ত হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকালে। রিপোর্ট এসেছে সন্ধ্যায়। তা হলে খুন হলো কবে? মঙ্গলবার রাত ১২টার কিছু পর থেকে বাড়ির তিন পুরুষ সদস্য বাড়িছাড়া। তার মানে আরও আগে বাড়ির দুই বৌ, মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ মৃতদেহের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাড়ির তিন পুরুষ সদস্যর থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদি তাই হয়, তা হলে সেই সময় কী চলছিল বাড়ির ভিতর?

    ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, দুই গৃহবধূর গলা ও হাতের শিরা কাটা, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু। কিন্তু ছোট ছেলে প্রসূন দে ও বৌ রোমি দের কিশোরী মেয়ে প্রিয়ংবদার শরীরে মিলেছে বিষক্রিয়ার প্রমাণ। হাতে ও পায়ে কালশিটে দাগ। অর্থাৎ তিন জনের মৃত্যুর ধরন একরকম নয়।

    রোমির মা এ দিন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, মেয়ের যে অভাব অনটন আছে, কোনও দিন তার আন্দাজ পাননি। মেয়ে, জামাইয়ের সম্পর্কেও কোনও অস্বাভাবিকতা দেখেননি। তা হলে রোমি কি দিনের পর দিন বাপের বাড়ি থেকে কিছু লুকিয়েছিলেন? নাকি ঘটনার দিন রাতে এমন পরিস্থিতি হয়েছিল, রোমি বাপের বাড়িতে কিছু জানানোর সুযোগই পাননি? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তরের জন্য প্রসূন দে, প্রণয় দেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। আপাতত বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁরা ভর্তি। চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুই ভাই আপাতত স্থিতিশীল। চিকিৎসা চলছে সুদেষ্ণা ও প্রণয়ের নাবালক ছেলেরও।

  • Link to this news (এই সময়)