আট মাসে আগেই হারিয়েছেন মেয়েকে, এবার ছেলে, এক বছরের মধ্যেই দুই সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা মা
আজকাল | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
মিল্টন সেন,হুগলি: মাত্র আট মাস আগে মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। সেই মৃত্যুশোক এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবার। এরই মাঝে মর্মান্তিক মৃত্যু হল ছেলের। দুই সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা মা-বাবা। প্রতিদিনের মতো বুধবার সকালে স্কুলে গিয়েছিল বছর ১৫-র অভিনব দালান। কিন্তু কে আর জানত বেলা গড়াতেই সব শেষ হয়ে যাবে। চাঁপদানি আর্য বিদ্যাপীঠ স্কুলে দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিল অভিনব। একসময় ওই স্কুলেরই ছাত্রী ছিলেন তার দিদিও। স্কুলে এক সহপাঠীর সঙ্গে মারামারি হয় অভিনবর। বুকে ঘুষি মারে সহপাঠী। সেখানেই সে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির চাঁপদানি পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোজি ও গণেশ দালানের দুই সন্তান ছিল। বছর কুড়ির অনামিকা ও পনেরো বছরের অভিনব। গত বছর জুন মাসে স্থানীয় মাঠে হাঁটার সময় হঠাৎ করেই পড়ে গিয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে যান অনামিকা। চিকিৎসক জানিয়ে দেন মৃত্যু হয়েছে তাঁর। সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছিল। ওই শোক কোনও ভাবে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিল দালান দম্পতি। তারই মধ্যে আবার এক মর্মান্তিক ঘটনা। দুই সন্তানকে হারিয়ে পুত্রশোকে কাতর বাবা-মা। গণেশের দুধের ব্যবসা রয়েছে। মাঝেমধ্যেই তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। তবে সন্তানদের জন্য তিনি কোনও কিছুতে খামতি রাখতেন না। সন্তান যাতে ভাল করে পড়াশোনা করে তার জন্য সব সময় চেষ্টা করতেন। সবে মাত্র পড়াশোনাতে মনোযোগ দিয়েছিল অভিনব। দাদু-ঠাকুমার কাছেও খুব প্রিয় ছিল অভিনব ও অনামিকা। গণেশের ভাইয়েরা কর্মসূত্রে ছড়িয়েছিটেয়ে রয়েছেন। এই ঘটনা শোনার পরে তাঁরাও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। স্কুলের প্রধানশিক্ষক বীরেন্দ্র কুমার ঝাঁ বলেছেন, ''অভিনবর দিদি তাঁরই স্কুলের ছাত্রী ছিল। একদিন মাঠে হাঁটার সময় পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। খুব ভাল ছাত্রী ছিল। এটা তাঁর কাছে খুবই মর্মান্তিক বিষয়। একই পরিবারের দুই সন্তানের মৃত্যু, ভাবা যায় না।'' দিদির মৃত্যু হয়েছে জুন মাসে, আর ভাইয়ের মৃত্যু ফেব্রুয়ারিতে। সন্তানশোকে কাতর মা ঘনঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন।