ভাষা দিবস উদযাপনে শুক্রবার হাই কোর্টে দিনভর হবে বাংলায় শুনানি! ভাবনা বিচারপতি বসুর
প্রতিদিন | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গোবিন্দ রায়: বিচারপতি থাকাকালীন একবার গোটা দিন বাংলায় শুনানি করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার তাঁরই ছায়া দেখা গেল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর মধ্যে। ২১ ফেব্রুয়ারি ‘মাতৃভাষা’ দিবসে ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধায় গোটা দিন বাংলায় শুনানি প্রক্রিয়া চালাতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি চলাকালীন নিজের এজলাসে বসে তিনি নিজেই এই নিয়ে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
তাঁর ইচ্ছা, ওই একটি দিন অন্তত বাংলায় সওয়াল করুন আইনজীবীরা। তাঁর মতে, ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষা দিবস। তাই ওই দিন বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান জানাতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। আদালত সূত্রে খবর, ওই দিন বিচারপতি বসুর এজলাসে সব আইনজীবীকে বাংলায় সওয়াল করতে বলা হবে। গোটা দিন ধরে বাংলাতেই চলবে শুনানি। যদিও মূলত, ইংরেজ আমলের এই ‘প্রিমিয়ার চার্টার্ড কোর্ট’, কলকাতা হাই কোর্টের জন্মলগ্ন থেকে ইংরেজিতেই শুনানি প্রক্রিয়া চলে আসছে। শুধু কলকাতা নয়, দেশের নিম্ন আদালত বা হাই কোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে ইংরেজিতেই শুনানির পাশাপাশি নির্দেশনামা লেখাও হয় ইংরাজিতে। সেক্ষেত্রে এটা কীভাবে সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে এক পবিত্র, অবিস্মরণীয় দিন। অবিভক্ত পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলা চালু করার দাবিতে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন চলাকালীন তরুণ যুবকদের উপর তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকদের নির্বিচার গুলিবর্ষণের কথা ভাবলে আজও ক্ষোভ উসকে ওঠে আমবাঙালির হৃদয়ে। আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের ওই দিনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করেন। সেই মিছিলে পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান সালাম, রফিক, বরকত, জব্বাররা। প্রাণের ভাষা প্রতিষ্ঠায় তাঁদের এই বলিদান সেদিন তো সফল হয়েছিলই, কালক্রমে সালাম, রফিক, বরকতদের মহান লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি পায়। ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পৃথিবীর যেখানে যত বাঙালি রয়েছেন, সকলে একযোগে দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করেন।