ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কত দূর? রিপোর্ট জমা দিতে হাই কোর্টে সময় চাইল রাজ্য
প্রতিদিন | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
গোবিন্দ রায়: ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নে আর কত সময় লাগবে, সে সংক্রান্ত রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আরও ২ সপ্তাহ সময় চাইল রাজ্য। তাতে সম্মতি দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। এর আগে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য রাজ্যকে আড়াই মাস সময় দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বৃহস্পতিবারের নির্দেশের পর মোট ৩ মাস সময় পেল রাজ্য।
দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলে ছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন সাংসদ দেব। সেই সময় এই প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কেন্দ্র টাকা না দিলে রাজ্য দেবে, এমনটা বলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। কথা রেখেছেন তিনি। বাজেটে এই বাবদ ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের শুনানিতে সেকথা প্রধান বিচারপতিকে জানান সরকারি আইনজীবী। এর আগে গত ২ জানুয়ারি ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে রিপোর্ট পেশ করে রাজ্য। সে সময় অবশ্য রিপোর্ট দেখে মৃদু উষ্মাপ্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। কীভাবে মাস্টার প্ল্যান কার্যকর হবে তা কেন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি, সে বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। আগামী বর্ষার আগে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন প্রধান বিচারপতি। এছাড়া ঘাটাল বন্যাদুর্গতদের জন্য কটি শাড়ি, বিছানার চাদর, লুঙ্গি, শিশু খাদ্য বিতরণ হয়েছে তা জানানোর নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি। ওই রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আরও ২ সপ্তাহ সময় চাইল রাজ্য।
উল্লেখ্য, ঘাটাল মূলত শীলাবতী, কংসাবতী এবং দ্বারকেশ্বর নদের শাখা নদী ঝুমির লীলাভূমি হিসাবে পরিচিত। তখনকার আমলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলস্বরূপ স্থানীয় ভূস্বামীরা এই নদীগুলির বন্যা ঠেকাতে সার্কিট বাঁধ দিয়ে নিজেদের জমিদারিতে নিচু এলাকাগুলিকে বন্যা থেকে বাঁচিয়ে আবাদি জমি বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। সেই জমিদারি জমানা আর নেই। কিন্তু জমিদারি বাঁধগুলি আজও রয়ে গিয়েছে। এই জমিদারি বাঁধগুলি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে। তার ফলে বাঁধগুলি ভেঙেই মূলত ঘাটাল এলাকায় বন্যা দেখা দেয় ফি বছর। উলটোদিকে জোয়ারের সঙ্গে আসা পলি নদী বাঁধ উপচে ছড়িয়ে পড়তে না পেরে নদীতেই জমতে থাকে পলি মাটি। ফলে নদীর জলধারণ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আর ফি বছর বন্যা প্রবণতাও বাড়তে থাকে। এই সমস্যা মেটাতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের ভাবনা। কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনায় ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত হয়নি বলেই অভিযোগ।