নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিজেপি পরিচালিত ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্য সরকারগুলির তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পরিস্থিতি অনেক ভালো। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বাজেট বিতর্কের জবাবি ভাষণে তথ্য-পরিসংখ্যান সহকারে তা তুলে ধরলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বাজেট বিতর্কে বিভিন্ন বিষয়ের পাশপাশি রাজ্য সরকারকে ঋণ নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন বিরোধী বিজেপি বিধায়করা। চন্দ্রিমাদেবী জবাবি ভাষণের শুরুতেই ঋণের প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ঋণ সবাই নেয়, আমরাও নিই। এফআরবিএম মেনেই রাজ্য ঋণ নেয়। মোট ঋণের পরিমাণ আগামী অর্থবর্ষে ৭ লক্ষ ৭১ হাজার কোটি টাকা হবে। তবে পশ্চিমবঙ্গের থেকে মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি বিজেপি শাসিত রাজ্যের ঋণ কতটা বেশি তা সভায়
অর্থমন্ত্রী জানান। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী জিএসডিপির অনুপাতে ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে সবথেকে ভালো পারফরম্যান্স যে চারটি রাজ্য করেছে, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও একটি। এই ব্যাপারে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান প্রভৃতি রাজ্যের পারফরম্যান্স যে খুবই খারাপ তা কেন্দ্রীয় সরকারের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্য সরকারকে আর্থিকভাবে কতখানি বঞ্চিত করা হয়েছে তা এদিন বিধানসভায় উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। আবাস যোজনায় টাকা ছাড়ার অনুমোদনের চিঠি কেন্দ্রীয় মন্ত্রক দিয়েছিল দু’বছর আগেই। কিন্তু সেই অর্থ আমাদের দেওয়াই হয়নি। গ্রামীণ আবাস যোজনায় ৮১৪০ কোটি টাকা, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ৬৯১৯ কোটি টাকা এবং জলজীবন মিশনে ২৫২৪ কোটি টাকা রাজ্যকে দেয়নি কেন্দ্র। আরও কয়েকটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করেন তিনি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্প্রতি সংসদে পশ্চিমবঙ্গে ১০০ দিনের কাজের ভুয়ো জব কার্ডের যে সংখ্যা উল্লেখ করেছেন, তাকে বিভ্রান্তিকর বলেই মন্তব্য করেন চন্দ্রিমাদেবী। তিনি মনে করেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এই ব্যাপারে ঠিকমতো পরিচালিত হননি। তিনি জানান, বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের থেকে অনেক বেশি ভুয়ো জব কার্ড বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও ওই রাজ্যগুলির জন্য টাকা বরাদ্দ করছে মোদি সরকার। এহেন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও সামাজিক ও উন্নয়ন খাতে রাজ্য সরকার কীভাবে অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়েছে, তার বিস্তারিত খতিয়ান দেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী।