‘রাত দেড়টা পর্যন্ত রোমির সঙ্গে কথা হয়েছিল’, দাবি শোকস্তব্ধ মা চিত্রাদেবীর
বর্তমান | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মেয়ের এরকম পরিণতি! কিছুতেই মানতে পারছেন না বাবা-মা। বৃহস্পতিবার হরিদেবপুরের বাড়িতে বসে ট্যাংরার দে বাড়ির ছোট বউ রোমি’র বাবা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘ওরা মেয়েকে মেরে দিয়েছে।’ অবশ্য এনআরএস হাসপাতালের মর্গ থেকে বেরিয়ে স্বপনবাবু উত্তেজিত হয়ে বললেন, ‘আমি কিচ্ছু জানি না।’ মেয়ের সঙ্গে রাত দেড়টা পর্যন্ত কথা বলেছিলেন মা। কিছুই বুঝতে পারেননি। ওদিকে বড় বউ সুদেষ্ণা দে’র বাবা-মা নেই। পাইকপাড়ায় আদি বাড়ি হলেও, তাঁর ভাই মুম্বইতে থাকেন। তিনিও এদিন এসেছিলেন। কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে নেই সুদেষ্ণার ভাই সাত্যকি শীল। তাঁর শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা বলছিলেন, আমরা তেমন কিছু জানি না। তবে গত সোমবার সাত্যকির সঙ্গে তাঁর দিদির শেষবারের মতো কথা হয়েছিল। সেদিন কলকাতা এসেছিলেন ভাই। ফোনে দিদিকে বলেছিলেন, ‘এবার হল না, পরেরবার কলকাতায় এলে দেখা হবে।’ সেই দেখা আর হল না। রোমির মা চিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘আমার একটাই মেয়ে, একটাই নাতনি, সবাই চলে গেল। নাতনির পরীক্ষা চলছিল। মঙ্গলবার পরীক্ষা ছিল না। সোমবার রাত পর্যন্ত মেয়ের সঙ্গে কথা হয়।’ তাঁর কথায়, ‘সেদিন রাত দেড়টা নাগাদ মেয়ে ফোন করেছিল। সেটাই শেষ কথা। সন্দেহজনক কিছু মনে হয়নি। কথাবার্তায় কোনও অস্বাভাবিকতা ছিল না। মঙ্গলবার সকাল থেকে ফোন বন্ধ। জামাই, নাতনিকে ফোন করি। প্রণয়কেও ফোন করি। কেউ ফোন ধরেনি। সকলের ফোন সুইচড অফ ছিল। তারপর থেকে আর ফোন খোলা পাইনি একবারের জন্যেও !’ বেলা বাড়তেই এনআরএসের বাইরে দে বাড়ির দুই বউয়ের আত্মীয়স্বজনরা জড়ো হয়েছিলেন। কেউই অবশ্য নাম প্রকাশ করতে চাননি। এক আত্মীয় বললেন, ‘বাড়ি, গাড়ি, লাইফস্টাইল দেখে মনে হয়, কোনও সমস্যা ছিল!’ আর এক আত্মীয় পাশ থেকে বলে উঠলেন, ‘আমরা সবটাই জানি। আপনাদের বলতে পারব না। আমাদের পরিবারের বিষয়, আমাদের মধ্যেই থাকুক।’ আর এক মহিলার মন্তব্য, ‘এত কিছু টের পেলে কী আটকাতাম না!’ ট্যাংরায় দে বাড়ির চামড়ার গ্লাভস তৈরির কারখানার গেট বুধবারের মতো এদিন ছিল বন্ধই। - নিজস্ব চিত্র