• ঝঞ্ঝা, অক্ষরেখা, ঘূর্ণাবর্তে ভরদুপুরেই বর্ষার আবহ
    এই সময় | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: তেজ না থাকলেও বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদও কলকাতার আকাশ ছিল রোদ ঝলমলে। এক ঘণ্টার মধ্যেই সেই পরিস্থিতি আমূল বদলে গেল। অল্প কয়েক মিনিটের মধ্যেই আকাশের দখল চলে গেল কালো মেঘের হাতে। বাস–মিনিবাসের চালকরা আলো জ্বালিয়ে দিতে শুরু করলেন বাসের ভিতরেও। ততক্ষণে ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করেছে। ঘড়িতে যখন সকাল ১১টা, সেই সময়ে মধ্য কলকাতায় পুরোদস্তুর বর্ষাকালের বৃষ্টি। শহরের উত্তর শহরতলিতে অবশ্য সকাল থেকেই জমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল।

    দক্ষিণবঙ্গের কলকাতা–সহ বিভিন্ন জেলায় বুধবার থেকে বৃষ্টি শুরুর পূর্বাভাস ছিলই। নির্দিষ্ট দিনে বৃষ্টি শুরুও হয়েছিল। তবে কলকাতায় বুধবার রাত পর্যন্ত শুকনো ছিল। বৃহস্পতির সকালেও বেশ কিছুক্ষণ মেঘের দেখা পাওয়া যায়নি। যখন আকাশে মেঘ উঁকি দিল, তারপর বাস্তবেই ‘চোখে অন্ধকার’ দেখলেন শহরের বাসিন্দারা। ঘন মেঘ এবং বজ্রবিদ্যুৎ–সহ বৃষ্টির দাপটে পরের কয়েক ঘণ্টায় তুমুল বৃষ্টি পেল শহর। আলিপুর হাওয়া অফিসের রিপোর্ট, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত আলিপুরে ৪৭.৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার পর থেকে ২৪ ঘণ্টায় বসিরহাটে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৭৫ মিমি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধের মধ্যে বর্ধমান শহরে বৃষ্টির পরিমাণ প্রায় ৮০ মিমি।

    ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহের শেষ দিকের এই বৃষ্টি প্রসঙ্গে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা বলেন, ‘পশ্চিমি ঝঞ্ঝা, গাঙ্গেয় বঙ্গ থেকে তেলেঙ্গানা পর্যন্ত বিস্তৃত একটি নিম্নচাপর অক্ষরেখা এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তৈরি বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবেই ওডিশা, দক্ষিণ ঝাড়খণ্ড এবং উপকূলবর্তী বাংলার বেশ কিছু এলাকায় রবিবার পর্যন্ত এমনই আবহাওয়া থাকবে।’ বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলোয় অর্থাৎ, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমানেও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলিতেও। আবহবিদদের পূর্বাভাস, আজ শুক্রবার কলকাতার আবহাওয়া কিছুটা ভালো থাকলেও দক্ষিণবঙ্গের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তবে, গোটা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব ক’টি জেলা জুড়ে বৃষ্টি বাড়বে শনি ও রবিবার।

    বৃহস্পতিবার অতি দ্রুত দক্ষিণবঙ্গের আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যাওয়া এবং তার কিছুক্ষণের মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ার ফলে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান অনেকটাই কমে আসে। একাধিক জেলায় শিলাবৃষ্টির ফলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা তেমন বাড়তে পারেনি। দিঘা (৩১.৫ ডিগ্রি), উলুবেড়িয়া (৩০.৫), পুরুলিয়া (৩০.৩) এবং সিউড়ি (৩০) ছাড়া এ দিন কোনও জায়গারই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে ছিল না।

  • Link to this news (এই সময়)