• অনলাইন সাফারি বুকিং ফেরান, দাবি ব্যবসায়ীদের
    এই সময় | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অঞ্জন চক্রবর্তী ও পিনাকী চক্রবর্তী

    সাফারি সস্তা হলেও পর্যটকদের সংখ্যা নিম্নমুখী! জিপ হোক বা হাতি সাফারি, জলদাপাড়ায় দু'ক্ষেত্রেই এসেছে অপ্রত্যাশিত ধাক্কা। টিকিট পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে বুকিংয়ের সংখ্যা কমে গিয়েছে অনেকটাই। আর সব মিলিয়ে তার প্রভাব পড়ছে ডুয়ার্সের পর্যটন ব্যবসায়। এই অবস্থায় জলদাপাড়ায় জঙ্গল সাফারিতে অনলাইন বুকিং ফিরিয়ে আনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

    জলদাপাড়া বনবিভাগের তরফে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জাতীয় উদ্যানে সাফারির অনলাইন বুকিং। এখন টিকিট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়িয়ে 'আগে এলে আগে পাবেন' এই পদ্ধিততে বুকিং হচ্ছে। সাফারির মূল্য বেশ খানিকটা কমলেও গত মাস খানেকে জলদাপাড়া, বক্সা ও গোরুমারা কার্যত পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। কিন্তু কেন? টিকিট কাউন্টারে গিয়ে বুকিংয়ের নিশ্চয়তা না থাকাতেই পর্যটকদের ভিড় কমছে তিন জঙ্গল। অনলাইনে আগে থেকে বুকিং করা থাকলে সেই আশঙ্কা থাকত না।

    পর্যটন ব্যবসায়ীদেরও অভিযোগ, অনলাইন পদ্ধতি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাফারির বুকিং আদৌ মিলবে কি না তা নিয়ে দেশ–বিদেশের পর্যটকরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন। আর ওই সুযোগে স্থানীয় স্তরে সাফারির অফলাইন বুকিংয়ে মাথা চাড়া দিয়েছে দালালচক্র। বাড়তি টাকা নিয়ে সাফারির টিকিট পাইয়ে দেওয়ার কিছু অভিযোগও সামনে উঠে এসেছে। জলদাপাড়ায় জিপ সাফারির এক গাইড ইন্দ্র বাহাদুর বলেছেন,‘গোটা দিনে একটাও সাফারি হয়নি, এমন দিনও কেটেছে। অনলাইন বুকিং ব্যবস্থা ফিরে এলে সবার সুবিধা হবে।’

    ইস্টার্ন ডুয়ার্স ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন গোটা বিষয়টা জানিয়ে জেলাশাসক আর বিমলার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের দাবিপত্র পাঠিয়েছে বৃহস্পতিবার। পর্যটক ব্যবসায়ী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেছেন ’হাতি ও জিপসি সাফারির জন্য অনলাইন বুকিং প্রথা উঠে যাওয়ায় আমরা সমস্যায় পড়েছি। অনলাইন বুকিং বন্ধ থাকায় পর্যটকরা আর জলদাপাড়া, গোরুমারা বা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পমুখী হচ্ছেন না। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আবার, অনলাইন বুকিং না থাকায় দালালচক্রও গজিয়ে উঠেছে। তাই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগের মতোই হাতি ও জিপসি সাফারির অনলাইন বুকিং চালুর দাবি জানিয়েছি।‘ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পর্যটন ব্যবসায়ীদের ওই দাবিপত্র নবান্নে পাঠানো হবে।

    এছাড়া পর্যটন ব্যবসায়ীরা গাইড, নৃত্য ও সংগীতশিল্পীদের টাকা আগের মতোই টিকিট কাউন্টার থেকেই দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তাঁদের দাবি, অনলাইন বুকিং পদ্ধতি চালু থাকার সময়ে গাইড ও স্থানীয় শিল্পীরা টিকিট কাউন্টার থেকেই সরকারি ভাবে তাঁদের হকের টাকা পেতেন। এখন সরাসরি পর্যটকদের কাছ থেকে সেই হকের টাকা পেতে অযথা হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে গাইড ও শিল্পীদের অভিযোগ। যদিও পর্যটন ব্যবসায়ীদের ওই অভিযোগ নিয়ে বন দপ্তরের আধিকারিকরা কেউ মন্তব্য করতে চাননি।

  • Link to this news (এই সময়)