এই সময়, দত্তপুকুর: হজরত খুনের পর পুলিশি হেফাজতে নির্বিকার মূল অভিযুক্ত মহম্মদ জলিল গাজি। নৃশংস ভাবে খুনের পরেও কোনও তাপ উত্তাপ নেই তার আচরণে। লকআপে দিব্যি স্বাভাবিক ভাবেই খাওয়া–দাওয়া করছে সে।
অন্যদিকে, হজরতকে খুন করে পুলিশের কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করেছে জলিলের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন। জলিলের চাপেই সে হজরতকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করতে বাধ্য হয়েছিল বলেও পুলিশকে জানিয়েছে সে। হাতুড়ি দিয়ে আঘাত না করলে তাকেও খুন করার হুমকি দিয়েছিল জলিল। সেই ভয়েই হজরতকে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেছিল সুফিয়া।
এ দিকে, হজরত খুনের ১৬ দিন পর বুধবার খুনে ব্যবহৃত দা এবং হাতুড়ি উদ্ধার করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ। কিন্তু এখনও উদ্ধার হয়নি নিহত যুবকের মোবাইল ফোন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত হজরত লস্করের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল জলিলের স্ত্রী সুফিয়ার। ভাড়া বাড়িতে দু’জনে মিলে মদের ফোয়ারা উড়িয়ে পার্টিও করেছিল।
হজরতের সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয় তার। সেই সম্পর্ক থেকেই হজরত খুনের পর পুলিশি হেফাজতে থেকে এখন আক্ষেপ করছে সুফিয়া বলে দাবি তদন্তকারীদের।
বৃহস্পতিবার দত্তপুকুর খুন কাণ্ডে সাংবাদিক সম্মেলন করে পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খড়িয়া বলেন, ‘হজরত, জলিল একই সঙ্গে চুরি–ডাকাতি করত। চুরির ৪০০ গ্রাম সোনা–সহ নগদ টাকার সবটাই ছিল হজরতের কাছে। হজরত চুরির বখরার হিস্যা দিত না জলিল এবং গ্যাং সদস্যদের।
এই নিয়ে জলিলের আক্রোশ ছিল। পুলিশের সোর্স হিসেবে হজরত ধরিয়ে দিত জলিলকে। জলিলের অবর্তমানে দত্তপুকুরের পশ্চিম মুরালির ভাড়া বাড়িতে মাঝেমধ্যেই আসত হজরত। সুফিয়ার সঙ্গে দেদার পার্টি করে শারীরিক সম্পর্কও করত হজরত। বিষয়টি জানার পরেই হজরতের উপর জলিলের ব্যক্তিগত আক্রোশ চরমে ওঠে। জলিল সুফিয়া মিলেই হজরত খুনের ব্লু প্রিন্ট তৈরি করে।’
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, সে ফোন করলে হজরত আসবে না জেনেই ২ ফেব্রুয়ারি সুফিয়াকে দিয়ে জলিল তাঁকে ফোন করায়। সুফিয়ার পার্টি করার প্রস্তাব পেয়েই গাইঘাটা থেকে দত্তপুকুরে নেমে মদের বোতল, জল, চিপসের প্যাকেট কিনে নিয়ে এসেছিল হজরত। স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রতিশোধ নিতেই হজরতকে খুন করে নির্বিকার জলিল।