রণয় তিওয়ারি: 'আজকে কাজে আসতে হবে না, কালকে আসিস'! ১৫ বছরের পুরোনো কর্মীকে ফোন করে বলে প্রণয়। শেষ কয়েক মাস স্যালারি দিতেও দেরি করেছে। কিন্তু পরের দিন বেল বাজালেও দরজা খোলেনি। গত ১৫ বছরে এমনটা হয়েনি। পরে অবশ্য ফোন করে প্রণয় রায় বলে আজকে আর আসতে হবে না, ZEE ২৪ঘন্টা কে বললেন বাবলা সর্দার। কে এই বাবলা...? দে" পরিবারে গত ১৫ বছর ধরে সুইপারের কাজ করেন তিনি।
তাঁদের বাড়ি এবং কারখানা, দুজায়গাতেই কাজ করতেন তিনি। প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারেও কাজে গিয়েছিলেন বাবলা। বাড়ির মেন গেটের কলিং বেলও বাজান তিনি। কিন্তু আশ্চর্যজনক কেউই বাড়ির দরজা খোলেনি। এরপর তিনি কারখানার দিকে চলে যান। এরপরই অবশ্য বাবলার মোবাইলে প্রণয় বাবুর ফোন ঢুকতে শুরু করে।ফোনের ওপার থেকে বাবলাকে বলে দেয় আজকে (সোমবার) আর কাজে আসতে হবে না।
বুধবারে কাজে আসিস। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাড়ির পুরোহিতকেও বলে দেওয়ার জন্যে। তিনিও যাতে কাজে না আসেন। ট্যাংরা থানা এলাকারই বাসিন্দা বাবলা। শুক্রবার নিজের বাড়ির অদূরে দাঁড়িয়ে বলেন, অত্যন্ত ভালো লোক তাঁরা। একেবারে সোনার পরিবার। ভাইয়ে ভাইয়ে খুব মিল। একেবারে বন্ধুর মতো। কিন্তু সেই পরিবার আত্মহত্যা করতে পারে বা দুই ভাই নিজেদের স্ত্রীকে খুন করতে পারেন, এমনটা হতেই পারে না, বলছেন বাবলা।
তিনি আরও জানান, বাড়িতে রান্নার লোক-সহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মচারী রয়েছেন। প্রতিমাসে ঠিক টাইমে স্যালারি দিয়ে দিতেন। কোনও সমস্যা নিয়ে গেলে প্রচুর হেল্প করতেন। পুজোর সময়ও টাকা পয়সা দিতেন। মাসের ১ তারিখেই মাইনে দিয়ে দিতেন। কিন্তু শেষ কয়েক মাস মাইনে দিতে দেরি করেছেন। ১০ থেকে ১২ তারিখে মাইনে দিতেন। জানুয়ারি মাসে, ১ তারিখের জায়গায় ২০ তারিখে মাইনে দিয়েছেন। কিন্তু এই ফেব্রুয়ারি মাসে ১০ তারিখে মাইনে দিয়েছিলেন তিনি।
বাবলা আরও জানায় যে, সোমবারের পর বুধবার কাজে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গিয়ে দেখেন, বাড়ির সামনে পুলিস। তারপর ঘটনার সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। তবে বাবলার কথায়, দে পরিবার, আত্মহত্যা বা খুন করতেই পারে না...। ট্যাংরাকাণ্ডের তদন্তে একের পর এক যে তথ্য সামনে আসছে, তাতে শিরদাঁড়া দিয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে যেতে বাধ্য।