জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুই বাংলার আবেগ। অমর একুশের সকালে দুই বাংলার মানুষজন ভাষা উৎসব পালন করে এসেছেন দীর্ঘ সময় ধরে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড প্রতি বছর ভারত-বাংলাদেশের মানুষ ভাষা দিবসের দিনে সমবেত হন। কিন্তু এবার সেই ছবি ধরা পড়ল না। দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ। নো ম্যানস ল্যান্ডে যাওয়াও বারণ। তবে এপাড়ের পেট্রাপোল সীমান্তে ভাষা দিবস পালন হল। উঠে এল বাংলাদেশের পরিস্থিতি প্রসঙ্গ।
দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে আছে। দুই দেশের সীমান্ত এলাকাতেও তার আঁচ এসে পড়েছে। গতকাল বিএসএফ-বিজিবি বৈঠকেও একাধিক বিষয় উঠে এসেছে। সীমান্ত এলাকায় উসকানি নিয়েও কথা উঠেছে। এপাড়ের সীমান্তে বেড়েছে আরও কড়া নজরদারি। এই অবস্থায় আজ শুক্রবার পেট্রাপোল বন্ধরে এবার ভাষা উৎসব পালন করল ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। এছাড়াও ছিলেন একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে একসঙ্গে ভাষা দিবস পালন করা গেল না। সেই প্রসঙ্গে হতাশাও প্রকাশ করেছেন তিনি। পেট্রাপোল বন্ধরে এবার ভাষা উৎসব পালন করে ছয়ঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতি। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা মিছিল করে পোস্টার-ব্যানার হাতে এদিন পেট্রাপোল বন্দরে আসেন। বাংলা গান বাজতে থাকে গোটা এলাকায়।
২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর সীমান্তে দুই দেশ যৌথভাবে ভাষা উৎসব করে এসেছে। নো ম্যানস ল্যান্ডের অনুষ্ঠানে দুই বাংলার মানুষ সম্প্রীতির মেলবন্ধনে জড়িয়ে থাকেন। মিষ্টি-সহ অন্যান্য স্মারকও বিতরণ করা হয়। কিন্তু এবার সব বাতিল। সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর জানান, ভাষা শহিদদের প্রতি সম্মান জানানো হত প্রতি বছর। এবার সেটা হল না। তিনি আশা করেন, আগামী দিনে ফের একসঙ্গে দুই দেশের মানুষ একসঙ্গে এই অনুষ্ঠানে সামিল হবেন।
যৌথ ভাষা উৎসব না হওয়ায় ব্যথিত শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। অনেকে মন ভারাক্রান্ত থাকার কথাও বলেছেন। ছাত্রছাত্রীরাও এদিনের অনুষ্ঠানে সামিল হন।