সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঠিক আগেই হারিয়ে গিয়েছেন ‘বাংলা ভাষা’র অন্যতম কাণ্ডারি সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তাই এবারের ভাষা দিবস তাঁকেই উৎসর্গ করল রাজ্য সরকার। শুক্রবার বিকেলে দেশপ্রিয় পার্কের ‘অমর একুশে’ মঞ্চে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান মঞ্চে তাঁকেই স্মরণ করা হল। মঞ্চে প্রয়াত সঙ্গীতকারের ছবি রেখে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী-সহ বিশিষ্টরা। এরপর রাজ্য সঙ্গীত ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ গেয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। মঞ্চে প্রতুলবাবুর স্ত্রীকে আগলে নিজের পাশে বসালেন মুখ্যমন্ত্রী। সদ্য প্রিয়জন হারানো বৃদ্ধাকে জড়িয়ে রইলেন পরম মমতায়। এরপরই গাওয়া হল প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘বাংলায় গান গাই’।
রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর দেশপ্রিয় পার্কে অমর একুশে শহিদ বেদি তৈরি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই প্রতি বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে থাকে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে তাতে যোগ দেন বাংলার বিশিষ্ট গুণীজনরা। এবছরও তার ব্যতিক্রম হলো না। ভাষা শহিদের মূল স্থান বাংলাদেশে এবছর ভাষা দিবস পালিত হয়েছে কার্যত নম নম করে। বদলের হাওয়ায় ইউনুসের বাংলাদেশ অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছে। তারই একটা, নজিরবিহীনভাবে এবারের ভাষা শহিদ দিবসে ইউনুসের অনুপস্থিতি।
কিন্তু বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান অক্ষুণ্ণ রেখে এবছর বাংলায় ভালোভাবেই উদযাপন করা হল ভাষা দিবস। সেখানে সদ্যপ্রয়াত প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করা হল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ”আমার একটা কথাই মনে হল। প্রতুলদা তো চলে গেলেন, সঙ্গে আমি ‘বাংলায় গান গাই’ গানটাও নিয়ে চলে গেলেন। মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা আগে আমি তাঁকে দেখে এসেছিলাম। উনি তার আগে কোনও সাড়া দিচ্ছিলেন না। আমি গেলাম আইটিইউ-তে। ডাকলাম, ‘প্রতুলদা, আমি মমতা।’ আমি বললাম, ‘আপনাকে তো গাইতে হবে, সুস্থ হতে হবে। উনি হাত দুটো প্রসারিত করে ইশারায় বোঝালেন, আর গাইতে পারবেন না।’ তবু আমার ক্ষীণ আশা ছিল, উনি হয়ত সুস্থ হবেন।” এদিনের অনুষ্ঠানে জয় গোস্বামী শ্রদ্ধা জানালেন কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর ‘বাংলা’ কবিতাটি পাঠ করে। কবি শ্রীজাত পড়লেন প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর নতুন কবিতা। তাঁকে হারিয়েও আসলে এদিনের অনুষ্ঠান হয়ে রইল ‘প্রতুলময়’।