কিছুদিন আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ওইসব প্যাক প্যাক দিয়ে হবে না। প্যাক প্যাকের কথায় কান দিতে হবে না। তখন থেকেই রাজ্য–রাজনীতি তে ঝড় বইতে শুরু করেছিল। তারপর একটা বেসরকারি সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে এসে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আইপ্যাক ভাল সমীক্ষা করতে পারে। কিন্তু নির্বাচনে জেতাতে পারে না। এই কথা শোনার পরই আইপ্যাকের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে গিয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বলে সূত্রের খবর। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে আইপ্যাকের। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যখন বাংলায় ১৮টি আসন পেয়ে যায় তারপর আইপ্যাককে নিয়ে আসেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে চুক্তি হয়। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এবার সেই আইপ্যাক সংস্থার কর্তা নবান্নে এসে ঘুরে গিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে যত নির্বাচন বাংলায় হয়েছে সবকটিতেই বড় সাফল্য পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ১৮টি আসন কমে গিয়ে ১২টিতে নেমেছে। আর সেখানে ২৯টি আসন জিতে সফল হয় তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আসছে। তাই স্ট্র্যাটেজি সাজানোর কাজ চলছে। এই আবহে বুধবার নবান্নে গিয়েছিলেন আইপ্যাকের অন্যতম কর্তা প্রতীক জৈন। নবান্নে গিয়ে প্রায় একঘণ্টা কথা বলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। এই তথ্য মিলেছে ‘দ্য ওয়াল’ পোর্টাল থেকে। সেখানে নির্বাচনের বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
যদিও সূত্রের খবর, আইপ্যাককে নিয়ে করা মন্তব্যের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। যদিও আইপ্যাকের মাধ্যমে তা কেটে গিয়েছে। এই সেতুবন্ধন করতেই আইপ্যাকের অন্যতম কর্তা প্রতীক জৈন নবান্নে গিয়েছিলেন। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের। তাই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আলোচনা হতেই পারে। শুরুতে ছিলেন প্রশান্ত কিশোর বা পিকে। এখন সেটাই হয়েছে প্রতীক জৈন বা পিজে। সেখানে একসময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছিল, ওসব প্যাক প্যাক বুঝি না। এখন থেকে দল আমিই চালাব। আমার কথাই শেষ কথা।
সেখানে তাহলে আবার আইপ্যাকের নবান্ন সফর কেন? উঠছে প্রশ্ন। অভিষেকের সঙ্গে যে মনোমালিন্য হয়েছিল তা মেটাতেই প্রতীক জৈনের নবান্ন সফর বলে অনেকে মনে করছেন। এখন দেখার বিষয়, এই বৈঠকের পর আইপ্যাকের ভূমিকা কেমন হয়। কোন কোন কাজ তারা করছে সেটাই দেখার বিষয়। বুধবারের বৈঠকের পর আবার ফুল সুইংয়ে কাজ করবে আইপ্যাক বলে মনে করা হচ্ছে। তবে নবান্নে গিয়ে দেখা করার খবর সামনে নিয়ে আসে ‘দ্য ওয়াল’ পোর্টাল।