‘আমরা স্বাধীনতা চাই’ প্রথমবর্ষের হস্টেলে উঠল আওয়াজ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শঙ্কা
হিন্দুস্তান টাইমস | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং কাণ্ডের জেরে ২০২৩ সালেই বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। আর তা নিয়ে গোটা রাজ্য তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। এখন অভিযুক্তরা অনেকেই জেলে। এই আবহে নতুন করে আওয়াজ উঠেছে, ‘আমরা স্বাধীনতা চাই’। এই স্বাধীনতা চাওয়ার দাবিতে নতুন করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এই আওয়াজ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার নতুন করে হস্টেলে প্রথম বর্ষের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম মেনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের পৃথক ছাত্রাবাস চালু হয়েছে এই শিক্ষাবর্ষ থেকে। ওই ছাত্রাবাসের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাতে যখন খুশি প্রবেশের নিয়ম প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে পড়ুয়াদের একাংশ বলে অভিযোগ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের যে অংশ স্বাধীনতার দাবি তুলেছেন তাঁদের অভিযোগ, রাত ১০টা ঘড়িতে বাজলেই হস্টেলের গেটে তালা দেওয়া হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে ছাত্রদের হস্টেলে ঢুকতে বাধ্য করা হচ্ছে। এবার উপাচার্যের দফতর অরবিন্দ ভবনেও অভিযান করেন ওই ছাত্ররা। যাঁরা স্বাধীনতা চান। এভাবে ছাত্রদের উপর বাধ্যবাধকতা চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে রাতে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের ঘরে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দেন। যদিও অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত ছিলেন না। ছাত্রদের দাবি, আজ, শুক্রবার উপাচার্য দাবি মেনে নিলে তবেই তালা খোলা হবে। এই বিষয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় বলেন, ‘ইউজিসির দাবি মেনেই প্রথম বর্ষের জন্য পৃথক হস্টেল এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে।’
২০২৩ সালের র্যাগিংয়ের ঘটনা আজও কেউ ভোলেননি। প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় শিউরে উঠেছিল বঙ্গবাসী। তারপরই ক্যাম্পাসের ভিতরে ওল্ড পিজি এবং নিউ ব্লক হস্টেলে ২০২৪ সালে ঢোকা প্রথম বর্ষের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। এই বিষয়ে হস্টেল বণ্টন কমিটির সদস্য তথা অধ্যাপক রাজ্যেশ্বর সিংয়ের বক্তব্য, ‘ছাত্রদের প্রয়োজনে রাত ১১টা পর্যন্ত তাঁদের বাইরে থাকার অনুমতি দেওয়া যায়। প্রথম বর্ষের দু’টি হস্টেলের আবাসিকরা রাত ১১টা পর্যন্ত পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু অন্য বর্ষের ছাত্ররা বেশি রাতে প্রথম বর্ষের হস্টেলে প্রবেশ করতে পারবেন না। নিরাপত্তা সব থেকে বড় বিষয়।’
ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, প্রথম বর্ষের হস্টেলে রাতে ছাদের দরজা ভেঙে ব্যবহার করা হয়। এই নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায়ের কথায়, ‘ক্যাম্পাসের কয়েকটি জায়গায় সিসি ক্যামেরার অভাব আছে। নেশার আসর বসানো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। প্রথম বর্ষের ছাত্রদের নিরাপত্তায় হস্টেলে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দায়বদ্ধ।’ ‘আমরা স্বাধীনতা চাই’ এই আওয়াজ যাঁরা তুলছেন তাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মানতে চাইছেন না বলে অভিযোগ। তার মধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়াদের একটা বড় অংশ রয়েছে। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।