• ‘প্রতুলদা নেই, বাংলায় গান রয়ে গেল’, ভাষাদিবসে রাস্তার নামকরণ করে শিল্পীকে শ্রদ্ধার্ঘ্য মমতার
    আনন্দবাজার | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রয়াত শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, প্রতি বার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও এ বার নেই ‘প্রতুলদা’। তবে না থেকেও তিনি রয়ে গিয়েছেন। রয়েছে তাঁর ‘বাংলায় গান’। তাঁর স্ত্রীর উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এখন থেকে ল‍্যান্সডাউন প্লেসের নাম হবে ‘প্রতুল মুখোপাধ্যায় সরণি’।

    শুক্রবার দেশপ্রিয় পার্কের মঞ্চে রাখা ছিল প্রতুলের ছবি। উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী। সেখানে শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতুলদা না থেকেও রয়ে গিয়েছেন। বৌদি এসে সেই ধারা বহন করছেন। যে দিন মারা গিয়েছেন, মনে হয়েছে একটি কথা, প্রতুলদা চলে গেলেন, বাংলায় গান রয়ে গেল।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, শিল্পীর মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা আগেও হাসপাতালে তাঁকে দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় অর্ধচেতন থাকলেও তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন শিল্পী। মমতার কথায়, ‘‘মৃত্যুর ৪৮ ঘণ্টা আগে শেষ বার তাঁকে দেখার সুযোগ হয়। তখন তিনি আইসিইউতে ছিলেন। তার আগে দু’দিন তিনি সাড়া দেননি। আমি গিয়ে প্রতুলদাকে ডাকলাম। বললাম, আমি মমতা। বিশ্বাস করুন, তিনি তাকালেন। তাঁর চোখ দুটো জলে ভরে গেল।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানান, এর পর শিল্পীকে মনের জোর দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। প্রতুলের রক্তচাপ নেমে গিয়েছিল। চিকিৎসকেরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে ‘ট্রমা’ কাজ করছিল।

    মমতা জানান, এর পরে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে বসে ‘প্রতুলদা’কে অনেক বুঝিয়েছিলেন। তার পরে তাঁর রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘ক্ষীণ আশা ছিল, হয়তো বা সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবেন। তবে আমি বিশ্বাস করি, আমাদের সকলের কথা তিনি শুনছেন। পার্থিব জগতে না-থাকলেও হৃদয় জগতে তাঁর স্থান স্বর্ণখচিত হয়ে থাকবে। প্রতুলদা ছাড়া ভাষা আন্দোলনের অনুষ্ঠান এর আগে কখনও করিনি। তিনি না থাকলেও সবটা রয়েছে তাঁকে ঘিরে।’’

    এর পরেই মমতা জানান, ভাষাদিবস সকলের। মাতৃভাষার প্রতি আবেগ সব মানুষেরই। সে কারণে প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান তিনি করেন। রাজ্য সরকার অন্য অনেক ভাষাকেই স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে রাজবংশী, সাঁওতালি, কুরমানি, হিন্দি। মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, গত বছর ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি আদায় করে নিয়েছে বাংলা। এ জন্য শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘বস্তা বস্তা বই দিয়ে প্রমাণ করেছি যে, বাংলা কয়েক হাজার বছরের পুরনো ভাষা।’’ সম্প্রীতি, শান্তি বজায় রাখার আহ্বানও জানান তিনি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)