রোগী-চিকিৎসকের সম্পর্ককে নিবিড় করতে যতটা সম্ভব রোগীর মাতৃভাষায় লিখতে হবে প্রেসক্রিপশন। যাতে এক জন রোগী সহজেই বোঝেন রোগ সারাতে চিকিৎসক কী পরামর্শ দিচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে ভাষা অন্যতম সেতু। আজ, শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তিনটি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগের অনুষ্ঠানে এমনই আবেদন রাখা হবে চিকিৎসক সমাজের কাছে।
নেহরু চিলড্রেন্স মিউজ়িয়ামের সভাঘরে আয়োজন করা হয়েছে ‘সম্ভব হলে রোগীর মুখের ভাষাতেই লেখা হোক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন’ শীর্ষক এক আলোচনাসভা। আয়োজক লিভার ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য সার্জন অব ইন্ডিয়া (রাজ্য শাখা) এবং রাজ্য অর্থোপেডিক অ্যাসোসিয়েশন। আয়োজক চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, রোগীকে পরীক্ষা করার পরে যে প্রেসক্রিপশন দেওয়া হয়, তাতে ওষুধের নাম, প্রয়োগের পদ্ধতি এবং অন্যান্য বিধি লেখা হয়। কিন্তু ডাক্তারি পঠনপাঠন ইংরেজিতে করায় প্রেসক্রিপশনে ওই সব কিছুই চিকিৎসক লেখেন ইংরেজি ভাষায়। চিকিৎসকের সামনে বুঝে নিলেও, অধিকাংশ রোগী বা তাঁর পরিজন আবারও বোঝার জন্য ভরসা করেন ওষুধের দোকান কিংবা বেশি শিক্ষিত মানুষের উপরে।
আয়োজকদের মতে, তাতে সহায়তা যেমন হয়, তেমনই ভিন্ন বিশ্লেষণে বিভ্রান্ত হন রোগী। কিন্তু ওষুধের নামটি ইংরেজিতে লেখা ছাড়া বাকি পরামর্শ যদি রোগীর ভাষায় প্রেসক্রিপশনে লেখা হয়, তা হলে এমন সমস্যা কমতে পারে বলেই মত লিভার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর। তাঁর কথায়, ‘‘চিন, জাপান, বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন দেশে এই চল রয়েছে। মনে রাখতে হবে, চিকিৎসকের সঙ্গে রোগীর সম্পর্ক ভালবাসার। সেই ভাষা হতে হবে মুখের ও অন্তরের ভাষা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর অর্থ কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানে ইংরেজি ভাষাকে অস্বীকার করা নয়। বরং রোগীর স্বার্থে মানবিক পদক্ষেপ। চিকিৎসক যদি রোগীর ভাষায় ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) লিখতে না পারেন, সেখানে ইংরেজি থাকুক। তবে অভ্যাস বদলের সলতে পাকানো দরকার।’’