ঘিস নদী থেকে আবারও উদ্ধার মর্টার শেল, কীভাবে নদীতে আসছে এত বিস্ফোরক, তৈরি হয়েছে রহস্য...
আজকাল | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
অতীশ সেন, ডুয়ার্স: জলপাইগুড়ি জেলার ওদলাবাড়ি সংলগ্ন ঘিস নদীতে আবারও পাওয়া গেল বিস্ফোরক মর্টার শেল। বিগত প্রায় এক বছরে বিভিন্ন সময়ে এই ঘিস নদীর চর থেকে পরপর পাঁচবার বিস্ফোরক মর্টার শেল উদ্ধার হয়েছিল। পরে সেগুলি সেনাবাহিনীর আধিকারিকেরা এসে নিষ্ক্রিয় করেন। শুক্রবার আবারও একটি মর্টার শেল পাওয়া যাওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে ঘিস নদীতে পাথর তোলার কাজ করার সময় কয়েকজন শ্রমিক নদীর পাশে থাকা একটি বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে ওই মর্টার শেলটিকে দেখতে পান। এর আগেও কয়েকবার এরকম শেল এই এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়ায় শ্রমিকদের বস্তুটি কী, তা চিনতে অসুবিধা হয়নি। তাঁরাই খুঁটির নীচে সেটিকে রেখে পুলিশকে খবর দেন। এর পাশাপাশি বস্তিবাসীদের সতর্ক করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেনাবাহিনীকে খবর দেয়া হয়েছে। শনিবার তারা এসে মর্টার শেলটিকে পরীক্ষা করে দেখবেন। এরপর প্রয়োজন মতো সেনার তরফ থেকে সেটিকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হবে।
কীভাবে ঘিস নদীতে বার বার বিস্ফোরক মর্টার শেল পাওয়া যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তিস্তার আচমকা জলচ্ছাসে সিকিমে অবস্থিত সেনাবাহিনীর একটি ছাউনি ভেসে গিয়েছিল। এর ফলে বহু বিস্ফোরক ও অস্ত্রশস্ত্র তিস্তার জলে ভেসে যায়। পরবর্তীতে সেগুলি জলপাইগুড়ি সংলগ্ন তিস্তার নিম্ন অববাহিকার বিভিন্ন এলাকা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা খানিকটা উদ্ধারও করেন। তবে এই সমস্ত অস্ত্র তিস্তা থেকে ভেসে ঘিস নদীতে আসা কোনও মতেই সম্ভব নয়। কারণ তিস্তা নদীর উৎস এবং গতিপথ থেকে ঘিস নদীর উৎস ও গতিপথ সম্পূর্ণ আলাদা। আবার ঘিস নদী প্রবাহিত হয়ে যেখানে তিস্তা নদীতে মিশেছে সেই এলাকার 'তিস্তা ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ'-এ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন অস্ত্রের মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ব্যবহৃত মর্টার শেল নদীর স্রোতের বিপরীতে উচ্চগতির দিকে ভেসে আসাও সম্ভব নয়। কালিম্পং জেলার গীতবিয়ং, গীতখোলা প্রভৃতি এলাকা থেকে বিভিন্ন ঝোড়া ও পাহাড়ি নদীর জলে ঘিস নদী সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্ত এলাকা থেকেই একমাত্র এই শেল নদীতে ভেসে জাতীয় সড়কের কাছাকাছি এলাকায় চলে আসা সম্ভব। দূর্গম এই পাহাড়ি এলাকায় অতীতে এমন বিস্ফোরক পদার্থ কেউ কোনও কারণে মজুত করেছিল কি না, সে বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্দেহ প্রকাশ করছেন।