বোলপুরে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি ভাঙচুর, বিতর্কের জেরে বন্ধ কাজ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
হারিয়ে যেতে বসেছিল শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য। ভেঙে ফেলা হচ্ছিল প্রখ্যাত শিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে। অবনীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতেই তাঁর পুত্র অলকেন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। যে বাড়িতে বেশ কিছুদিন বাস করেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সম্প্রতি বহুতল নির্মাণের উদ্দেশ্যে সেই বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই বোলপুর পুরসভার উদ্যোগে বাড়ি ভাঙ্গার কাজ বন্ধ করা হয়েছে। বোলপুর পুরসভার সদস্যরা এখন আলোচনায় বসেছেন কী ভাবে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ি সংরক্ষণ করা যায়, তা নিয়ে।
উল্লেখ্য, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইপো অবনীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় আচার্য ছিলেন। একজন সাহিত্যিক ও শিল্পী হিসেবে তাঁর প্রচুর খ্যাতি রয়েছে। জানা গিয়েছে, বিশেষ একজনের মালিকানাধীন ওই জমি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবারের। তাঁর পরিবারের সদস্যরা এক প্রোমোটারকে বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন। সম্প্রতি সেখানে বহুতল আবাসন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছিল। সেই উদ্দেশ্যে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়। বিষয়টি নজরে আসতেই জেলাশাসক বিধান রায় খতিয়ে দেখছেন, ওই বাড়িটি হেরিটেজের আওতায় রয়েছে কিনা।
ইতিমধ্যেই জেলাশাসক পুরসভা, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। সেজন্য একদিকে যেমন সরজমিনে দেখার পর রিপোর্ট তৈরিতে ব্যস্ত ভূমি আধিকারিকরা, অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পুরসভা কর্তৃপক্ষ আপাতত বাড়ি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী সময়ে বোলপুর পুরসভা কর্তৃপক্ষ ২২টি ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। বৈঠকে আলোচনা করা হবে অবনপল্লীতে কীভাবে শিল্পীর এই ‘আবাস’ নামক বাড়িটির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও প্রবীণ আশ্রমিকদের মত, প্রয়োজনে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পরিবারের সদস্যরা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অথবা রাজ্য তথা জেলা প্রশাসনকে সংরক্ষণের জন্য হেরিটেজ রক্ষার স্বার্থেই ভাবনা চিন্তা উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারতেন। তা না করে বাণিজ্যিক মুনাফা লোভীদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী ভবন সংরক্ষণের জন্যই যথাযথ ব্যবস্থা প্রয়োজন।