• যাদবপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের
    প্রতিদিন | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রমেন দাস: যাদবপুরে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’! বিচার চেয়ে উপাচার্যের দপ্তরের দরজায় তালা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের একাংশের! রাতদুপুরেও অবাধে যাতায়াতের দাবি! হস্টেলে স্বাধীনতা চাই বলে অরবিন্দ ভবনে উপাচার্যের দপ্তরের বাইরে তালা দেওয়ার অভিযোগ। বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসেই আসেননি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত। শুক্রবার সকালের পরে ওই তালা খোলা হয় বলে খবর।

    ফের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উত্তেজনা। বৃহস্পতিবার উপাচার্যের ঘরের গেটে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়। শুক্রবার তালা খুললেও দিনভর এই ঘটনা ঘিরে চলে বিতর্ক। হস্টেলে রাতে প্রবেশের স্বাধীনতা দিতে হবে, বহাল হওয়া সময়ের বদল করতে হবে, এই দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এদিন উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত ক্যাম্পাসে গিয়ে নিজের দপ্তরে কাজ করেন। তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।

    ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুতে তোলপাড় হয়েছিল ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে র?্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় অভিযুক্তরা এখন জেলে। হস্টেলে বাইরের লোকজন ছাড়াও পাশ করে যাওয়া সিনিয়ররাও প্রভাব খাঁটিয়ে থাকতেন বলে খবর। সেই ঘটনার পরে কঠোর হন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাত ১০টার পর হস্টেলের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। কাউকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বহিরাগতদেরও কোনও জায়গা নেই। সেই নিয়ম চালু হয়েছিল। শুধু তাই নয়, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্যও আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়।

    কিন্তু এবার ঠিক কী হয়েছিল? বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ক্যাম্পাসের অন্দরে থাকা ওল্ড পিজি হস্টেল নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত। ওই হস্টেলেই থাকেন প্রথমবর্ষের পড়ুয়ারা। গত বছর মেন হস্টেলে নবাগত ছাত্রের মৃত্যুর পর, প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারদের পৃথক হস্টেলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ইউজিসির নিয়ম মেনে ব্যবস্থা করে কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই ঘটে বিপত্তি। নিয়ম পালন তো দূর, একাংশের দাবি হস্টেলের আবাসিক পড়ুয়াদের একাংশ রাত ১০টার পরেও অবাধে যাতায়াত করার দাবি তোলে। শুধু তাই নয়, হস্টেলের বোর্ডারদের সঙ্গে বহিরাগত থাকলে, তাঁদেরও ঢুকতে দিতে হবে। সেই দাবিও তোলা হচ্ছে। এমনকী একাধিক ক্ষেত্রেই তাঁদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে প্রশ্ন তোলে।

    সম্প্রতি, আইসিসি নির্বাচন এবং এসএফআইয়ের বিক্ষোভ আবহেই সক্রিয় হয় প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের একাংশ। উপাচার্যে ঘরের সামনেই লাগানো হয় বোর্ড। সেখানে একাধিক দাবি তুলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি। এই ‘নজিরবিহীন’ ঘটনায় বিস্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। জুটা-র সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “যে কোনও ছাত্ররাই দাবি জানাতেই পারেন। কিন্তু এই তালা মারার ঘটনা কোনওভাবেই সমর্থন করছি না। আমরা এর নিন্দা করছি। গত বছর ছাত্রের মৃত্যুর পর প্রথমবর্ষের ছাত্রদের সুরক্ষার স্বার্থে হস্টেলে নিয়ম করা।” প্রায় একই সুরে ঘটনার নিন্দা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপা-র নেতা মনোজিৎ মণ্ডল। তাঁর কথায়, “এই ঘটনা সমর্থনযোগ্য নয়, আমি নিন্দা করছি। ছাত্রদের উচিত উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করা।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)