• হাওড়ায় ‘রহস্যময়ী’র সঙ্গে দেখা করতেই গিয়েছিলেন আইসি জয়ন্ত? গুলিকাণ্ডে উদ্ধার হল সেই পিস্তলও
    আনন্দবাজার | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ‘রহস্যময়ী’র সঙ্গে দেখা করতেই কি হাওড়ায় গিয়েছিলেন হুগলির চণ্ডীতলা থানার আইসি জয়ন্ত পাল? সেই ‘রহস্যময়ী’ বান্ধবীর বয়ানের ভিত্তিতে সেই প্রশ্নই উঠছে। ইতিমধ্যেই গুলিকাণ্ডে ব্যবহৃত সেই পিস্তলটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, হাওড়ায় ঘটনায় পুলিশ অফিসারের সার্ভিস রিভলভারটি ব্যবহার করা হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছিল একটি দেশি পিস্তল। সেটি ঘটনাস্থল থেকে আধ কিলোমিটার দূরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে শুক্রবার। শিবপুর থানার পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে পিস্তলটি। কিন্তু গুলি কি আইসি জয়ন্তই চালিয়েছিলেন? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। যদি তিনি নিজেই গুলি চালিয়ে থাকেন, তা হলে ওই পিস্তল তাঁর কাছে এল কী ভাবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

    বুধবার গভীর রাতে মধ্য হাওড়ার নেতাজি সুভাষ রোডের পাশে গৌড়ীয় মঠের কাছে একটি নির্জন গলিতে গুলিবিদ্ধ হন জয়ন্ত। আইসির বাঁ হাতে গুলি লেগেছিল। পরে তাঁকে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জয়ন্তকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন তাঁর সঙ্গেই থাকা এক যুবতী এবং আরও তিন জন। ঘটনাস্থলে সেই যুবতীর উপস্থিতি নিয়েই রহস্য দানা বেঁধেছে।

    পুলিশ সূত্রে খবর, যুবতীর নাম-পরিচয় জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। যুবতী হাওড়ার সাঁকরাইল এলাকার বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে আলাপ হয়েছিল জয়ন্তের। এলাকার অনেকের দাবি, ওই পুলিশ অফিসার এবং তাঁর সঙ্গিনীকে প্রায়ই মঠের উল্টো দিকে একটি বহুতলের ফ্ল্যাটে আসতে দেখা যেত। কিন্তু ওই দাবির সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ। এ ব্যাপারে তারা সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানায়নি। অন্য দিকে, যুবতীর মায়ের দাবি, তাঁর মেয়ে জয়ন্তকে চেনেন না। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই যুবতী। আরও তিন জন ছিলেন তাঁর সঙ্গে।

    খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বৈষ্ণব সম্মিলনী (ঘটনাস্থলের কাছেই) লেনে এক বান্ধবীর বাড়িতেই গিয়েছিলেন যুবতী। সেই বান্ধবীর দাবি, যুবতী এবং জয়ন্ত পূর্বপরিচিত। ঘটনার রাতে বান্ধবীর শরীর খারাপের কথা শুনেই তাঁর ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন ষুবতী। কিন্তু জয়ন্ত তাঁর ফ্ল্যাটে আসেননি। তবে যুবতী যখন বান্ধবীর ফ্ল্যাটে ছিলেন, তখন বার বার তাঁর মোবাইলে ফোন আসছিল। জিজ্ঞাসা করায় যুবতী বলেছিলেন, ‘‘স্যরের ফোন!’’ বান্ধবী জানান, রাতের খাওয়াদাওয়া সেরে যুবতী এবং তাঁর সঙ্গীরা বেরিয়ে যেতেই তিনি ব্যালকনি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পান। এর পরেই তিনি যুবতীকে ফোন করেন। যুবতীই তাঁকে ফোনে জানান, নীচে এক জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর পর আর ভয়ে তিনি নীচে নামেননি বলেই জানিয়েছেন ওই বান্ধবী।

    জয়ন্তকে হাওড়ার যে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছেন, পুলিশ অফিসারের সহকর্মী পরিচয় দিয়েই জয়ন্তকে ভর্তি করিয়েছিলেন কয়েক জন। হাসপাতাল জানিয়েছে, গুলি জয়ন্তের শরীরে প্রবেশ করেনি। শরীর ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। দ্রুত তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)