নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: শুক্রবার নন্দীগ্রাম সীতানন্দ কলেজে টিএমসিপি এবং এবিভিপি-র মধ্যে সংঘর্ষে তুমুল উত্তেজনা ছড়াল। দু’পক্ষই ইট, লাঠি নিয়ে একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিয়ন রুমে দেদার ভাঙচুর চালায় বিজেপির ছাত্র সংগঠন। ইউনিয়ন রুমে থাকা সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণান, বিধানচন্দ্র রায়ের ফটো দেওয়াল থেকে খুলে আছড়ে ভেঙে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় দু’পক্ষের চারজন জখম হন। তাঁদের নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
জানা গিয়েছে, এদিন বহিরাগতদের কলেজে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রিন্সিপ্যালের কাছে ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল এবিভিপির। ওই কর্মসূচির মধ্যেই কলেজ ক্যাম্পাসে সংগঠনের পতাকা টাঙানো হচ্ছিল। সেই সময় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এনিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। দু’পক্ষ পরস্পরের উপর হামলা চালায়।
কলেজে দুই ছাত্র সংগঠনের রেষারেষিতে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ। মাঝেমধ্যেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় কলেজ গেটে পুলিস মোতায়েন করতে হচ্ছে। এরফলে কলেজের পঠনপাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। গত ৫ফেব্রুয়ারি কলেজে ন্যাক পরিদর্শক দলের কাছেও পড়ুয়ারা এই সমস্যার কথা তুলে ধরেন। দু’দিন আগে বহিরাগতের সঙ্গে কলেজ ছাত্রীর প্রেম নিয়ে ঝামেলা বেধেছিল। প্রিন্সিপ্যালের ঘরেই দুই সংগঠনের সদস্যরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, কলেজে বহিরাগতদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। কলেজের ক্যান্টিনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
দুই ছাত্র সংগঠনই বিপক্ষকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ। যে কারণে সরস্বতী পুজোর দিন দুই ছাত্র সংগঠনের দু’জনকে সংকল্পকারী হিসেবে নিতে হয়েছিল। কয়েক বছর কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়নি। এই অবস্থায় দু’পক্ষই নিজেদের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে কলেজে নিয়ন্ত্রণ রাখতে মরিয়া। এই প্রতিযোগিতায় কলেজে স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। পঠনপাঠনে তার প্রভাব পড়ছে। ছাত্র সংখ্যাও আগের তুলনায় কমছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ইউনিট সভাপতি সুমিত মণ্ডল বলেন, কয়েকদিন ধরে কলেজে বিজেপির ছাত্র সংগঠন গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি একজন বহিরাগত এবিভিপির পক্ষ নিয়ে প্রিন্সিপ্যালের ঘরে ঢুকে কলেজ পড়ুয়াদের মারধর করেছে। আমাদের পক্ষ থেকে এই ঘটনার প্রতিবাদ করা হয়। শুক্রবার ওরা ফের আমাদের ইউনিয়ন রুমে হামলা চালিয়েছে। মণীষীদের ছবি ভেঙে দিয়েছে। বাধা দিতে গিয়ে আমাদের একজন গুরুতর জখম হয়েছেন। এবিভিপি সংগঠনের নেতা সুজন ভুঁইয়া বলেন, কলেজে প্রাক্তনীদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে। কলেজ ক্যান্টিনে ধুমপান ও মাদক সেবন চলছে। এইসব বন্ধ করতেই শুক্রবার আমরা প্রিন্সিপ্যালের কাছে ডেপুটেশন দিই। তারপর সংগঠনের পতাকা টাঙানোর সময় ওরা বাধা দেয়। আমাদের উপর হামলা চালায়। তাতে তিনজন জখম হয়েছেন।-নিজস্ব চিত্র