• খালপাড় দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স, সাত দিনের মধ্যে ভাঙার নির্দেশ জেলাশাসকের
    বর্তমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: খালপাড় দখল করে কংক্রিটের মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হচ্ছিল। সাতদিনের মধ্যে ওই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলেন ডিএম। সেই সঙ্গে সেচদপ্তরের জায়গায় অবৈধ গ্রিল ফ্যাক্টরি খোলা হয়েছিল। তার বিদ্যুৎ সংযোগ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেটে দেওয়ারও তিনি নির্দেশ দেন। শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী গঙ্গাখালি ও সোয়াদিঘি খাল খনন কাজ পরিদর্শনে যান। বেলা ১১টা নাগাদ জেলাশাসক হলদিয়া-কোলাঘাট জাতীয় সড়ক বরাবর মিলননগর থেকে পায়ে হেঁটে গঙ্গাখালি খাল বরাবর উত্তর ঔষধপুরে যান। খালের দুই পাড় দখল করে সারি সারি বাড়ি ও দোকান গজিয়ে উঠেছে। জেসিবি নামিয়ে খাল খনন শুরু হতেই ধস নামতে শুরু হয়েছে। এই সুযোগে দখলদাররা খনন কাজ আটকে দেওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা করছেন। এর ফলে কাজে গতি বাধা পাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিন জেলাশাসক এলাকা যান। সঙ্গে ছিলেন তমলুকের মহকুমা শাসক দিব্যেন্দু মজুমদার এবং শহিদ মাতঙ্গিনীর বিডিও রথীনচন্দ্র দে।


    উত্তর ঔষুধপুরে খালপাড় দখল করে স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর মাজি কংক্রিটের শক্তপোক্ত পিলার তুলে মার্কেট কমপ্লেক্স বানাচ্ছেন। একসঙ্গে প্রায় আটটি মার্কেট কমপ্লেক্স বানানোর পর ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। নির্মীয়মাণ ওই কংক্রিটের কমপ্লেক্স দেখে জেলাশাসকের চক্ষু চড়কগাছ। ব্লক প্রশাসন ও সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের তিনি ভর্ৎসনা করেন। নজরদারির অভাবে এভাবে খালপাড়ে অবৈধ নির্মাণ তৈরি হচ্ছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলাশাসক। শুক্রবারের মধ্যেই শঙ্কর মাজিকে নোটিস দিয়ে এক সপ্তাহের ম঩ধ্যে ওই নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেন। লাগোয়া একটি গ্রিল ফ্যাক্টরি রয়েছে। সেচদপ্তরের জায়গায় কীভাবে এই ফ্যাক্টরি ইলেক্ট্রিক সংযোগ পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন জেলাশাসক। ২৪ঘণ্টার মধ্যে সংযোগ ছিন্ন করার নির্দেশ দেন তিনি।


    গত ১৭ফেব্রুয়ারি ৪১নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া মিলননগরে গঙ্গাখালির খাল খননের সময় খামারচক যাওয়ার রাস্তার ধারে ধস নামে। একসঙ্গে একাধিক দোকান ধসে নেমে যায়। এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে স্থানীয়রা জাতীয় সড়ক অবরোধে শামিল হন। পুনর্বাসনের দাবিকে সামনে রেখে খাল খননের কাজে বাধা দেওয়ার ডাক দেওয়া হয়। তারপর কাজের গতি কমেছে। খালের দুই পাড় দখল করে সারি সারি দোকান ও বাড়ি নির্মাণ হয়েছে। 


    ওই এলাকায় নকশা অনুযায়ী খনন হলেই দু’পাড়ে ধস নিশ্চিত। তাই খনন কাজ নিয়ে চাপা টেনশন রয়েছে। এরকম অবস্থায় শুক্রবার জেলাশাসক ওই এলাকায় খনন কাজ পরিদর্শনে গিয়ে কড়া বার্তা দেন। সাতদিনের মধ্যে শঙ্কর মাজির অবৈধ নির্মাণ ভাঙার জন্য তমলুকের মহকুমা শাসককে নির্দেশ দেন।


    গঙ্গাখালি খাল পরিদর্শনের পর জেলাশাসক কাঁকটিয়ায় সোয়াদিঘি খাল কাটার কাজ পরিদর্শনে যান। গত ২৫জানুয়ারি কাঁকটিয়া দুর্গামণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় খাল খননের ফলে ধস নামে। তারপর বিক্ষোভের জেরে সাময়িক কাজ বন্ধ ছিল। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কাজ শুরু হলেও গতি মন্থর বলে অভিযোগ। এদিন বরাত পাওয়া সংস্থাকে খাল খননের কাজে গতি আনার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। আগামী মে মাসের মধ্যে খনন কাজ শেষ করার টার্গেট দেওয়া হয়েছে। তারপর বর্ষা এসে গেলে ওই কাজ সম্ভব হবে না। তাই এদিন সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য একটি রিভিউ মিটিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে কাজের গতি আরও বাড়ানোর নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হবে। 


    ( তমলুকে মাতঙ্গিনী ব্লকে খাল সংস্কার পরিদর্শন করছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী।-নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)