অশ্লীল ভিডিও বানাতে বধূকে চাপ, রাজি না হতেই ছাদ থেকে ফেলে খুন
বর্তমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: অপহরণ করে গৃহবধূ-প্রেমিকাকে অশ্লীল ভিডিও বানাতে চাপ। রাজি না হওয়ায় ছাদ থেকে ঠেলে দিয়ে খুন! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল কালীগঞ্জ থানার পলাশী এলাকায়। মৃত ওই বধুর নাম মাম্পি দেবনাথ। বাড়ি পলাশীপাড়া থানার পলসুন্ডায়। বধূর বাপের বাড়ির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে কালীগঞ্জ থানার পুলিস। ধৃতের নাম টোটোন মালাকার। বাড়ি পলাশীর মালাকার পাড়ায়। ধৃতকে শুক্রবার কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাকে।
ডিএসপি মত্তাকিনুর রহমান বলেন, ‘পরিবারের তরফ থেকে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাম্পি পলসুণ্ডার শ্বশুরবাড়ির থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হয়ে যান। তাঁর স্বামী শ্যামচন্দ্র দেবনাথ পেশায় টোটো চালক। নিখোঁজের পর পরিবারের তরফ থেকে পলাশীপাড়া থানায় ডায়রি করেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি খবর পান তাঁদের মেয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি। ধৃত টোটোন মালাকার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। সেইমতো বাড়ির লোকজন হাসপাতালে আসেন। এসে দেখেন শরীরের একাধিক হাড় ভাঙা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। ১৭ ফেব্রুয়ারি কাউকে কিছু না জানিয়ে টোটোন মাম্পিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। বাড়িতে ফিরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মাম্পি। পরে তিনি মারাও যান। জানা গিয়েছে, মাম্পিকে স্ত্রীর পরিচয় দিয়েই হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল টোটোন। নিখোঁজ হওয়ার পর মাম্পির সঙ্গে মন্দিরে বিয়েও হয় টোটোনের। তার ভিডিও রয়েছে। এতেই প্রশ্ন উঠছে, আদৌও কি মাম্পিকে অপহরণ করা হয়েছিল? নাকি মাম্পি স্বেচ্ছায় প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন? পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
মাম্পির পরিবারের অভিযোগ, টোটোন ও তার বন্ধুরা মাম্পিকে অপহরণ করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর পলাশী ফুলতলা মোড়ের কাছে তিনতলা বাড়িতে আটকে রাখে। ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে টোটোন ও তার বন্ধুরা মাম্পিকে অশ্লীল ভিডিও বানাতে জোর করে। কিন্তু তাতে মাম্পি রাজি হননি। সেই রাগে টোটোনরা মাম্পিকে মারধর করতে শুরু করে। গুরুতর জখম হয়ে পড়লে তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। টোটোনরাই তাকে প্রথমে পলাশী গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি মারা যান। মাম্পির বাবা পবিত্র দাক্ষী বলেন, ‘ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে খুন করা হয়েছে। আমার মেয়ের দুটো পা-সহ শরীরের অনেক হাড় ভেঙে যায়। আমাদের কিছু না জানিয়েই হাসপাতাল থেকে মেয়েকে নিয়ে চলে যায়। আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য টোটোন ও তার বন্ধুরা দায়ী।