• কাচঘেরা অন্দরমহলে খুনের আগে ‘অচল’ করা হয় ১৮ সিসি ক্যামেরা, দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ!
    বর্তমান | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ট্যাংরার অটল সুর রোডের ২১/সি নম্বর বাড়ি। ঝাঁ চকচকে বিলাসবহুল। তিনটি বারান্দা, সব ঘরের জানালাই কালো কাচ দিয়ে ঘেরা। বাইরে থেকে যাতে কেউ কিচ্ছু দেখতে না পায়। কিন্তু, বাড়ির ভিতরে কড়া ‘নজরদারি’। ১৬টি সিসি ক্যামেরার নজরবন্দি গোটা অন্দরমহল। আর বাড়ির দরজায় বাইরের দিকে লাগানো রয়েছে আরও দু’টি ক্যামেরা। গত মঙ্গলবার দিনভর ট্যাংরার দে বাড়িতে কী ঘটেছে? তা জানতে, ১৮টি সিসি ক্যামেরার ওইদিনের ফুটেজ খতিয়ে দেখতে বসেন গোয়েন্দারা। সেখানেই খটকা। সোমবার সন্ধ্যা থেকেই সবকটি ক্যামেরার ‘নজরদারি’ কন্ট্রোলরুম থেকে ‘আনপ্লাগড’ করে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, খুনের আগেই ক্যামেরাগুলি রেকর্ডিং বন্ধ করে দেয়। তাহলে কি তথ্যপ্রমাণ লোপাটের উদ্দেশ্যেই সুপরিকল্পিত ছক? 


    ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যায় ৬টার মধ্যেই খুন হয়েছেন দে বাড়ির বড় বউ সুদেষ্ণা, ছোট বউ রোমি ও তার মেয়ে প্রিয়ংবদা। শুক্রবার ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার ও ফরেন্সিক আধিকারিকরা। সোজা সিসি ক্যামেরার কন্ট্রোলরুমে যান তাঁরা। ‘মঙ্গল-রহস্য’ ব্রেক করতে ওইদিনের ফুটেজ দেখতে যান বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, কোথায় কী! কন্ট্রোলরুমের তথ্য বলছে, শুক্রবার, বৃহস্পতিবার, বুধবার, মঙ্গলবার কোনও ফুটেজ রেকর্ডিংই হয়নি। শেষ ফুটেজ রয়েছে গত সোমবার সন্ধ্যার। তার আগে পর্যন্ত রেকর্ডিং হয়েছে। তদন্তকারী সূত্রের দাবি, সোমবার থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন দুই ভাই। বারবার একে অপরের সঙ্গে গভীর শলা-পরামর্শের ভিডিও ফুটেজ ধরা পড়েছে ক্যামেরা। কি নিয়ে এত আলোচনা? তাহলে কি চলছিলেন খুনের প্ল্যানিং-প্লটিং? স্পষ্ট হতে বিষয়টি নিয়ে জেরা করা হবে প্রণয়-প্রসূনকে। অন্যদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় বেশ কয়েকবার হন্তদন্ত হয়ে দোতলা থেকে তিনতলা ও তিনতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত উঠতে নামতে দেখা গিয়েছে প্রসূনকে। তখনও পর্যন্ত দুই বউ জীবিত। রোমির মা চিত্রাদেবী জানিয়েছেন, সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ ফোনে কথা হয় মেয়ের সঙ্গে। পুলিসের দাবি, সোমবার সন্ধ্যার পরই বন্ধ হয়ে যায় ১৮টি ক্যামেরাই। এরপরেই প্রিয়ংবদাকে জোর করে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়ানো হয় বলে অনুমান। তার আগে চলে শারীরিক নির্যাতন। সেই দৃশ্য সিসি ক্যামেরাতে যাতে ধরা না পড়ে তার জন্যই ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)