এই সময়: গত এক বছরে কলকাতা পুর এলাকায় এক হাজার বেআইনি নির্মাণের অংশবিশেষ ভাঙা হয়েছে— শুক্রবার এমনই দাবি করেছেন পুরসভার আধিকারিকরা। কলকাতার ১৬টি বোরোতে গড়ে ৬২টি করে বিভিন্ন বেআইনি নির্মাণ ভাঙা পড়েছে বলে পুর আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
তাঁদের বক্তব্য, নির্মাণের যে অংশ বেআইনি ভাবে গড়ে তোলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, সেই অংশকেই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার জেরে কোনও নির্মাণের একটি তলাও পুরোপুরি ভাঙা পড়েছে। ভাঙা হয়েছে ছাদের অংশ ও পাঁচিলও। গত এক বছর ধরে যে সব এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে— বড়বাজার, তালতলা, বেলেঘাটা, যাদবপুর, কসবা, গড়িয়া, টালিগঞ্জ, মেটিয়াবুরুজ ও গার্ডেনরিচ।
২০২৪ সালের ১৮ মার্চ রাতে গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনার পরেই শহর জুড়ে বেআইনি নির্মাণ বন্ধে পথে নেমেছিল কলকাতা পুরসভা। এরপরে বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনি, ট্যাংরা–সহ একাধিক এলাকায় হেলে পড়া বাড়ি ঘিরেও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ কলকাতা পুরসভাকে অস্বস্তিতে ফেলে। বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানান, এক বছরে এক হাজার বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার কাজ খুব একটা সহজ নয়।
আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক বার হামলা, শাসানির মুখোমুখি হতে হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ নিয়ে গিয়েও বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজে বাধা পেয়েছেন ইঞ্জিনিয়াররা। তারপরেও এতগুলো বেআইনি নির্মাণ ভাঙার কাজ ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকেই সেরেছেন। যদিও পুরসভার একাধিক ইঞ্জিনিয়ার সংগঠনের বক্তব্য হচ্ছে, বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে ইঞ্জিনিয়াররা কখনও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাননি। অনেক সময়ে ভাঙার কাজে সরাসরি কাউন্সিলাররা দাঁড়িয়ে থেকে বাধা দিয়েছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।
গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে পড়ার পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দিয়েছিলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের রাস্তায় নেমে বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করতে হবে। গত এক বছর ধরে কলকাতা পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ইঞ্জিনিয়ার রাস্তায় ঘুরে বেআইনি নির্মাণের কাজে নেমেছিলেন। পুর আধিকারিকরা জানান, চিহ্নিত হওয়া একাধিক বহুতলে নোটিস দেওয়া হয়েছে। সেই নিয়ে মামলাও চলছে।