এই সময়, শিলিগুড়ি: সাঙ্কালন সেতুর পরে এ বার ফিদাং ও জঙ্গুর মাঝে তৈরি লাচুং ও লাচেন যাওয়ার একমাত্র সেতুটি বেহাল হয়ে পড়েছে। ফলে পর্যটকদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলো উত্তর সিকিমের দরজা। উত্তর সিকিমের সাঙ্কালন সেতু কয়েক দিন আগে তিস্তায় ভেঙে পড়ে। ২০২৩ সালের অক্টোবরের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেই বন্ধ করে দেওয়া হয় উত্তর সিকিম। গত বছর পুজোর আগে লাচুং খোলা হয়। জানুয়ারি মাসে খোলা হয় লাচেন।
এ বার ফের কবে উত্তর সিকিম পর্যটকদের জন্য খোলা হবে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। উদ্বেগ ছড়িয়েছে লাচুংয়ে আটকে থাকা শ’তিনেক পর্যটকদের নিয়েও। তাঁদের ফিদাংয়ের ভাঙা সেতু দিয়েই ফেরাতে হবে। নতুবা হেলিকপ্টারে তুলে আনতে হবে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘লাচুংয়ে আটকে থাকা পর্যটকদের কী ভাবে ফেরানো সম্ভব সেটা সিকিম প্রশাসনের সঙ্গে কথা হবে চূড়ান্ত করা হবে। কিন্তু গরমের মরশুমের আগে ফের উত্তর সিকিম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের পর্যটন ফের একটা বড়সড় সঙ্কটের মধ্যে পড়ে গেল।’
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আচমকা এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে লাগাতার পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দৌরাত্ম্যে। ফেব্রুয়ারি মাসে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হঠাৎ করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে সিকিমে। এর ফলে লাচুং, লাচেন, ছাঙ্গু, নাথুলা এবং জুলুকে লাগাতার বৃষ্টি এবং স্নো–ফল হচ্ছে। লাচুংয়ে রাস্তার দু’পাশে কয়েক ফুট উঁচু বরফ জমে গিয়েছে। বৃষ্টির জেরে তিস্তা, লাচুং ও লাচেন নদীর জল বেড়ে গিয়েছে। নদীর জল বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রথমে সাঙ্কালনে সেনাদের তৈরি বেইলি ব্রিজ ভেঙে পড়ে। এ বার ফিদাংয়ে আরও একটি সেতুর একাংশ বসে গিয়েছে। ফলে ওই সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছে।
শুক্রবার মঙ্গন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লাচুং ও লাচেনে পর্যটকদের নতুন করে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দৌরাত্ম্য তাতেও কমার কোনও লক্ষণ নেই। বরং এ দিন গোটা সিকিম জুড়ে শিলাবৃষ্টি হয়। হালকা বৃষ্টি হয়েছে দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়েও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, রবিবার পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলবে। উত্তর সিকিমে আরও স্নো–ফল হতে পারে। দুই দিনাজপুর ও মালদায় শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টি হতে পারে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং শিলিগুড়িতেও। কেন্দ্রী আবহাওয়া দপ্তরের গ্যাংটক শাখার আধিকারিক গৌপীনাথ রাহা বলেন, ‘আশা করছি, রবিবারের পরে আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। তবে শনিবার এবং রবিবার আরও বৃষ্টি এবং স্নোফলের সম্ভাবনা রয়েছে।’