এই সময়,ঘাটাল: বসন্তে হঠাৎ বৃষ্টি। মেদিনীপুর জেলায় আবার ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। তার জেরে ধান থেকে আনাজ, সবচাষেই বেশ ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ করে আলু চাষে বিপুল ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। এক কথায় বসন্তের এই অকাল বর্ষণে মাথায় হাত ঘাটালের আলুচাষিদের। সবে ফলন তোলা শুরু করেছিলেন তাঁরা। এখনও জমিতে পড়ে রয়েছে আলু।
তার মাঝেই হঠাৎ বর্ষণে জমিতে থাকা আলুর পচন ধরতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। রতন সামন্ত নামে এক আলুচাষি বলেন, ‘ বৃষ্টির জেরে আলু তোলার পড়ে সমস্যায় পড়েছি আমরা। বৃষ্টির সঙ্গে আবার গত কয়েদিন জুড়ে প্রবল কুয়াশা চলছে। সেকারণে পোকার লাগতে শুরু করেছে।’
বাঙালির পাতে সারাবছরই আলুর ভূমিকা অপূরণীয়। তাই আলুর দামে হেরফেরের রেশ গিয়ে পড়ে সোজা হেঁসেলে। গত কয়েক মাসে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেকারণে হিমঘরগুলিতেও আলু মজুত রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। তার মধ্যে আবার বৃষ্টির ফলায় আলু নিয়ে বেজায় সঙ্কটে চাষিরা। হিমঘরগুলিতে জায়গা পাওয়া মুশকিল। সেকারণে আলু তোলার পরেও জমিতেই রাখছিলেন তাঁরা। গত দু’দিনে বৃষ্টি অসুরের তাণ্ডবে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আলুচাষিরা। যদিও কেবল আলু চাষেই নয়, অন্যান্য আনাজ চাষেও বিপুল ক্ষতি করেছে বসন্তের এই নিম্নচাপ।
মহকুমার আলুচাষিরা জানিয়েছেন দাম কমাতে যে কৌশল নিয়েছে সরকার তাতে তাঁদের হাতে আর টাকা আসছে না। চাষিদের অভিযোগ, চড়া দামে সার–কীটনাশক কিনে চাষ করতে হয়েছে। হিমঘরে আলু মজুত থাকায় তেমন দাম পাচ্ছেন না তাঁরা। মাত্র তিন থেকে চার টাকা কেজি দরে ব্যবসায়ীদের আলু বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। অনেক চাষী আবার অভিযোগ করেছেন, শস্যবীমার আবেদন করেও টাকা পাচ্ছেন না।
মহকুমার কৃষি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘ অসময়ের বৃষ্টির ফলে আলু–সহ রবিশস্যের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে ভয় পাওয়ার কারণ নেই। সরকার পাশে আছে। শস্যবিমার মাধ্যমে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সাহায্য করা হবে। বিষয়টি উপরমহলকে জানানো হয়েছে।’