এই সময়: প্রয়াত হলেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক শশী মুখোপাধ্যায়। বাংলার পাঠকরা যে দুই প্রবীণ সাংবাদিকের লেখা থেকে প্রথম বিমানবন্দর এবং উড়ান সংক্রান্ত খবর পড়তে শুরু করেছিলেন, তাঁদেরই অন্যতম ছিলেন দ্য স্টেটসম্যান–এর শশী মুখোপাধ্যায়।
অশীতিপর এই সাংবাদিক কয়েক দিন ধরে বয়সজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বিপত্নীক প্রবীণ সাংবাদিকের একমাত্র কন্যা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করেন। রানিকুঠীর বাসিন্দা শশী মুখোপাধ্যায়ের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে।
কিন্তু খবরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ তাঁকে টেনে আনে সংবাদপত্রের দুনিয়ায়। প্রথমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্থানীয় সংবাদদাতা, এর কিছুদিনের মধ্যেই কলকাতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বিভিন্ন ধরনের ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক উড়ান এবং সেই সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকতা করতে শুরু করেন। সেটা ১৯৭০–এর দশকের একেবারে গোড়ার দিক। সেই সময়ে কলকাতার আর এক দিকপাল ‘অ্যাভিয়েশন রিপোর্টার’ ছিলেন আনন্দবাজার পত্রিকার নীহার ঘোষ।
পরের কয়েক দশক বাংলার পাঠকদের বিমানবন্দর সম্পর্কিত একের পর এক অসামান্য সংবাদ পরিবেশন করেছেন শশী–নীহার জুটি। দু’জনের মধ্যে পেশাদারি প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো ছিলই, সঙ্গে ছিল সুমধুর বন্ধুত্বও। কবে কোন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব বিমানযোগে কলকাতায় আসছেন, তাঁদের আসা–যাওয়ার পথে কোনও উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটল কি না — বাঙালি পাঠক সব খবর পেতেন এই দু’জনের মাধ্যমে।
তবে নিছক সংবাদ পরিবেশনই নয়, এই দুই সাংবাদিকের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব পরবর্তী প্রজন্মের সাংবাদিকদের ‘অ্যাভিয়েশন রিপোর্টিং’–এর জন্য ‘তৈরি করা।’
২০০০–এর গোড়ার দিকে কর্মজীবন থেকে অবসর নিলেও আরও কিছুদিন তিনি কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন। কয়েক বছর আগে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে শশী মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তার পর থেকেই তিনি মানসিক ও শারীরিক ভাবে অত্যন্ত ভেঙে পড়েছিলেন। নানা ধরনের অসুস্থতাও তাঁকে গ্রাস করেছিল। দুই অ্যাভিয়েশন রিপোর্টারের মধ্যে নীহার ঘোষ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীও শুক্রবার সন্ধ্যায় চলে গেলেন।